ইউক্রেনে রাতভর ১০৫৩ স্থাপনায় হামলার দাবি রাশিয়ার

ইউক্রেনের এক হাজার ৫৩টি স্থাপনায় মঙ্গলবার রাতে হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। মারিওপোলে এদিন আবারও ইউক্রেনের সেনাদের আত্মসমর্পণের আলটিমেটাম দিয়েছে রাশিয়া। একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা দাবি করেছেন, এবার ইউক্রেনের অস্ত্র সরবরাহ রুটে হামলা চালাতে পারে পুতিনবাহিনী। বিবিসি, রয়টার্স

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান

টেলিগ্রামে দেওয়া রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, মঙ্গলবার রাতভর চালানো রুশ হামলায় ১০৬টি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে। পাশাপাশি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে ছয়টি। এছাড়া ৭৩টি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চারটি কমান্ড পোস্ট, ইউক্রেনীয় জনশক্তি ও সামরিক সরঞ্জাম রয়েছে এমন ৫৭টি এলাকা, সাতটি শক্তিশালী অবস্থান ও চারটি গোলাবারুদের গুদাম, ছয়টি ট্যাঙ্ক ও নয়টি সাঁজোয়া যান এবং একটি এমএসটিএ-বি হুইটজার ব্যাটারি অস্ত্র। নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ৪০ ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে এবং সাতটি সামরিক সরঞ্জাম ইউনিট ধ্বংস করা হয়েছে বলেও বিবৃতিতে দাবি করে রাশিয়া।

এদিকে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিওপোলে এখনো লড়াই চালিয়ে যাওয়া ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে নতুন করে আলটিমেটাম দিয়েছে রাশিয়া। নতুন এই সময়সীমায় বুধবারের মধ্যে সেনাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে আত্মসমর্পণ না করার অঙ্গীকার করেছেন ইউক্রেনীয় কমান্ডাররা।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বন্দরনগরী মারিওপোলের অধিকাংশ এলাকা দখলে নেওয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। তবে ইউক্রেনীয় সেনাদের অবশিষ্ট একটি অংশ শহরটির আজভস্টাল ইস্পাত কারখানায় অবস্থান নিয়েছে। মূলত কারখানার ভেতরে রুশ বাহিনীর হাতে সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে তারা। রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেনের সৈন্যদের মারিওপোলের একটি ছোট এলাকায় কোণঠাসা করা হয়েছে।

ওদিকে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অভিযান মোকাবেলা এবং চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনকে জয়লাভে সাহায্য করতে কিয়েভকে আরও অস্ত্র পাঠানোর অঙ্গীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য মিত্র দেশগুলো। সে কারণে ইউক্রেনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার অংশীদারদের অস্ত্রের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত করতে অস্ত্রের চালানের জন্য ব্যবহৃত রুটগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে রাশিয়া- এমন দাবি একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার।

তার মতে, রুশ বাহিনী এতদিন পর্যন্ত কনভয় বা রেল সরবরাহের মতো চলমান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেনি, তবে তারা দেশটিতে অস্ত্র ও সরবরাহ পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত সেতু, রাস্তা এবং রেললাইনগুলো ধ্বংস করার চেষ্টা করতে পারে। তিনি এ-ও বলেন, যদি রুশ বাহিনী সেসব রুটেও হামলা চালায়, তবুও তারা অস্ত্র সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করতে পারবে না। এখন পর্যন্ত সেখানে সহজেই অস্ত্রের অনেক চালান প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ আরও ১০ বছর চলবে: যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো ইউক্রেনকে আরও ১০ বছরের জন্য যুদ্ধে উৎসাহিত করছে। সোমবার চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের এক উপসম্পাদকীয়তে এ অভিযোগ করা হয়। তাতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধকে দীর্ঘস্থায়ী করতে চায়।