আফগানিস্তানে শিয়া মসজিদে বিস্ফোরণ, হতাহত ৭০

ইসলামিক আমিরাত আফগানিস্তানের বলখ প্রদেশের রাজধানী মাজার-ই-শরীফের বৃহত্তম শিয়া মসজিদে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত ও ৬৫ জন আহত হয়েছেন। আফগান সম্প্রচারকারী টোলো নিউজ আজ বৃহস্পতিবার কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।

আফগানিস্তানে শিয়া মসজিদে বিস্ফোরণ

খবরে বলা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা প্রাথমিক পরিসংখ্যানের চেয়েও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দুপুরের নামাজের সময় বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর তালেবান নিরাপত্তা বাহিনী মসজিদের দিকে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।

মাজার-ই-শরীফের আবু আলী সিনাই বলখি হাসপাতালের প্রধান বলেছেন, শিয়া মসজিদে বিস্ফোরণে আহত বিপুল সংখ্যক লোককে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে আহতদের সঠিক সংখ্যা পরে জানানো হবে। বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিওতে মারাত্মক বিস্ফোরণের দৃশ্য দেখা গেছে, যা অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ছে।

কয়েক ঘণ্টা আগে, নানগারহার এবং কুন্দুজেও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তালেবান গাড়িতে হামলা হয়েছে এবং চার তালেবান সদস্য নিহত হয়েছেন। নানগারহারের স্থানীয় মিডিয়া এ তথ্য জানিয়েছে। এছাড়া আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পঞ্চম নিরাপত্তা জেলায় বোমা বিস্ফোরণে দুই শিশু আহত হয়েছেন।

আফগানিস্তানে শিয়া মুসলমানরা সখ্যালঘু। তাদের সংখ্যা আনুমানিক ১০ থেকে ২০ শতাংশ। আফগানিস্তানের শিয়ারা মূলত বারো গোষ্ঠী, যেখানে সংখ্যালঘু ইসমাইলি। আফগানিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিয়া হল টুয়েলভার প্রধানত হাজারা জাতিগোষ্ঠীর। পরবর্তী-বৃহৎ দল হল পশ্চিম হেরাত এবং ফারাহ প্রদেশের ফারসিওয়ান। অন্যান্য অনেক ছোট আফগানিস্তানের টুয়েলভার সম্প্রদায়ের মধ্যে রয়েছে কিজিলবাশ এবং সাদাত জনগোষ্ঠী।

আফগানিস্তানের শিয়াদের একটি ছোট অংশ নিজারি ইসমাইলিস। এই জনসংখ্যার মধ্যে রয়েছে দেশের উত্তর-পূর্ব অংশের (প্রধানত তাজিকিস্তানের সীমান্তবর্তী বাদাখশান প্রদেশে) পামির ভাষাভাষিদের অনেকেই।

বাঘলান প্রদেশে একটি ইসমাইলি সম্প্রদায়ের আবাসস্থল। তাদের নেতা সাইয়েদ মনসুর নাদেরী এবং তার ছেলে সাইয়েদ জাফর নাদেরী। সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের সময় প্রায় ১০ হাজার ইসমাইলি মিলিশিয়া সদস্য বাঘলান ইসমাইলি দুর্গ কায়ানকে রক্ষা করেছিল। তারা আক্রমণ না করার জন্য সোভিয়েতদের সাথে একটি চুক্তি করেছিল। কিন্তু যৌক্তিকভাবে তা মুজাহিদিনদের সমর্থন করেছিল।

২০০৩ সালে রিপোর্ট করা হয়েছিল, এই অঞ্চলে এবং বিশ্বব্যাপী অন্যান্য ইসমাইলি সম্প্রদায়ের বিপরীতে, বাঘলান ইসমাইলিরা বিশ্বব্যাপী ইসমাইলিদের আধ্যাত্মিক নেতা আগা খানের প্রতি তাদের চরম ভক্তি প্রদর্শন করে থাকে।