৬০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পণ্যমূল্য, বিশ্বব্যাংকের সতর্কবার্তা

করোনাকালে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে, উৎপাদনেও সংকট দেখা দিয়েছে। এরমধ্যেই ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনে খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম নতুন করে বেড়েছে। বর্তমান অবস্থা বেশি দিন স্থায়ী হলে সারা বিশ্বে খাদ্য সংকটে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

খাদ্য সংকট, ফাইল ছবি

বিবিসির অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক ফাইসাল ইসলামকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস। তিনি বলেন, এ বছর মার্চে বিশ্বব্যাপী খাদ্যশস্য, ভোজ্য তেল, দুধ-দুগ্ধজাত পণ্য, মাংস ও চিনির দাম ১৩ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এটি বিগত ৬০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দামবৃদ্ধির রেকর্ড।

এসব খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ার প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে করোনা মহামারিকে। মহামারিতে শুরু হওয়া এই সংকটকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে ইউক্রেন-রাশিয়ার সংঘাত। এই সংঘাত চলতে থাকলে তার প্রভাবে সারা বিশ্বে খাদ্যপণ্যের দামবৃদ্ধিও অব্যাহত থাকবে। এই মূল্যবৃদ্ধির হার শিগগিরই ১৩-৩৭ শতাংশে পৌঁছাতে পারে- এমন সতর্কবার্তাও উচ্চারণ করেন ডেভিড ম্যালপাস।

ডেভিড ম্যালপাস, ফাইল ছবি

বিশ্বের মধ্যে গমসহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্যশস্য উৎপাদন ও রপ্তানিতে বিশ্বে অন্যতম শীর্ষ দেশ হচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। দেশ দু’টির মধ্যে সংঘাতের কারণে শস্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, এতে বেড়ে গেছে পণ্যের দাম। তা ছাড়া সংঘাতের কারণে বিশেষ করে ইউক্রেনীয় চাষীরা এবার সেভাবে ফসল ফলাতে পারছেন না, যা আগামীতে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

প্রসঙ্গত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর পাশাপাশি দেশটির নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দিতে চেয়েছিল ইউক্রেন। পূর্ব-ইউরোপের সীমান্ত-লাগোয়া দেশটিকে এই প্রচেষ্টা থেকে থামাতে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করে আসছিল রাশিয়া। তাতেও কাজ না হওয়ায় সামরিক শক্তি প্রদর্শনে নামে মস্কো।

এতেও কাজ না হওয়ায় তীব্র উত্তেজনার মধ্যেই চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। একতরফা এই হামলা এখনো অব্যাহত রয়েছে, যা প্রতিরোধ করে আসছে ইউক্রেনের বাহিনী। এই সংঘাত বন্ধের কোনো লক্ষণ তো নেই-ই, বরং সাম্প্রতিক সময়ে হামলা অনেকটা বেড়ে গেছে।