ইউক্রেনীয়দের রাখার জন্য আফগানদের বহিষ্কার করছে জার্মানি!

মার্কিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের শরণার্থী হয়ে যারা আসছে, তাদেরকে স্থান করে দিতে অনেক আফগান পরিবারকে উচ্ছেদ করছে জার্মানি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ম্যাগাজিন ফরেন পলিসিতে উল্লেখ করা হয়েছে, তালেবান শাসনের কারণে পালিয়ে আসা আফগান পরিবারগুলোকে এতদিন আশ্রয় দিয়েছিল ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী ও সম্পদশালী এই দেশ। এছাড়া আগে থেকেই জার্মানিতে আফগান শরণার্থীরা স্থান পেয়েছিল।

জার্মানিতে আফগান শরণার্থী

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার প্রেক্ষিতে ইউরোপজুড়ে শরণার্থীর যে বন্যা তৈরি হয়েছে, তাদের জন্য জায়গা তৈরি করতে জার্মান সরকার সম্প্রতি আফগান পরিবারগুলোকে বহিষ্কার করে। আফগান শরণার্থীদের প্রতি বার্লিনের এ আচরণে হতাশা প্রকাশ করেছেন জার্মান সমাজকর্মীরাও।

মূলত জার্মান সরকার সে দেশে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য অস্থায়ী বাসস্থান মঞ্জুর করে, যা প্রতি ছয় মাস পর পর পুনঃমূল্যায়ন করা হয়। তবে প্রায়শই আশ্রয়প্রার্থীদের দেশের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে চূড়ান্ত আশ্রয় অনুমোদন করা হয় না।

ইউক্রেনের শরণার্থী

গত বছরের আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পর থেকে জার্মনিতে পালিয়ে আসা আফগানদের ক্ষেত্রে অন্যসব প্রক্রিয়া এড়িয়ে দ্রুত তাদের তিন বছরের আবাসিক পারমিট দেয়া হয়েছিল।

এর অর্থ হল, যারা ইতোমধ্যেই কয়েক বছর ধরে জার্মানিতে বসবাস করছেন, ভাষা বলতে এবং সেখানকার কালচারে চলতে সক্ষম তাদেরকে যে শ্রেণিতে রাখা হয়েছিল, আফগানদেরও সেই একই শ্রেণিতে রাখা হয়েছিল এবং তাদের সাথে আশ্রয়-প্রার্থী হিসেবে ওই আচরণ করা হয়, যে আচরণ আশ্রয় মঞ্জুর করা শ্রেণির সাথে করা হতো।

জানা গেছে, হঠাৎ করেই এই আফগানদের আবাসস্থল থেকে সরিয়ে দিচ্ছে জার্মান সরকার। ইউক্রেনের থেকে আসা শরণার্থীদের ঢল সামাল দিতেই এ পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটির।

বার্লিনের সিনেট ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টিগ্রেশন, লেবার অ্যান্ড সোশ্যাল সার্ভিসেস কর্তৃক আফগানদের উচ্ছেদের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিভাগটি জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় বিবেচনার ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর কোনো বিকল্প ছিল না। কারণ ইউক্রেন থেকে আসা শরণার্থীদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে, তাদের মাথার ওপর একটি ছাদ এবং একটি বিছানা দরকার ছিল।

এ বিষয়ে বার্লিন শরণার্থী কাউন্সিলের বোর্ড সদস্য তারেক আলাওস বলেন, যেসব আফগান পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকে কিছুদিন আবার কেউ কেউ অনেক দিন ধরে ওই স্থানে বসবাস করছিলেন। ধীরে ধীরে তাদের জীবনমানের উন্নতি হচ্ছিল কিন্তু এখন কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই তাদেরকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে তাদের কেউ এ বিষয়ে কথা বলার সাহস করেনি। তাদের আশঙ্কা, কথা বললে সেটি তাদের অভিবাসন স্থিতিকে আরো প্রভাবিত করতে পারে।