বামপন্থী ভোটারদের হাতে ম্যাক্রোনের ভাগ্য!

ফ্রান্সের জাতীয় নির্বাচনের দ্বিতীয় রাউন্ড অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল রোববার। এদিন জনপ্রিয়তায় শীর্ষ দুই প্রার্থী ম্যাক্রোন এবং লে পেন চূড়ান্ত জয়ের জন্য লড়বেন। জয়ের জন্য ৫০ শতাংশের বেশি ব্যালটের প্রয়োজন। এজন্য বামপন্থী ভোটারদের কাছে টানার শেষ চেষ্টা করছেন দুই প্রার্থী।

ম্যাক্রোন ও লে পেন

এ অবস্থায় ফ্রান্সের ভোটাররা কাকে বেছে নেবেন? ম্যাক্রোন কি আবার ক্ষমতার মসনদে বসতে পারবেন? এ ব্যাপারে বিবিসি কথা বলেছে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে। এএফপি, ডিজিটাল জার্নাল।

নিলি এবং তার স্বামী মাক জানালেন, লে পেনকে থামাতে সহায়তা করার জন্য ম্যাক্রোনের পক্ষ থেকে তাদের মতো ভোটারদের প্রতি বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে। কয়েক দশক ধরে তথাকথিত ‘রিপাবলিকান ফ্রন্ট’ মূলধারার ডান এবং বামকে একত্রিত করে জোটে আছে।

নিলির মনে হয়েছে, তিনি ২০১৭ সালে ম্যাক্রনকে ভোট দিয়ে তার দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এবার আর তাকে ভোট দেবেন না। নিলি চান লে পেন ফ্রান্সকে নেতৃত্ব দিক। তিনি বলেন, তারপরও যদি শেষ পর্যন্ত ম্যাক্রোন আবার ক্ষমতায় আসেন, তাহলে আমরা মনে কষ্ট পাব।

দরিদ্ররা আরও দরিদ্র এবং ধনী আরও ধনী হয়েছে: রোববারের নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে বামপন্থী ভোটাররা গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রথম রাউন্ডে প্রায় ৭.৭ মিলিয়ন ভোটার মেলেনচনকে সমর্থন করেছিলেন, আরও ৩.৫ মিলিয়ন গ্রিনস, সোশ্যালিস্ট এবং বিভিন্ন বাম প্রার্থীদের পক্ষে ভোট পড়েছিল।

এই সমস্ত ভোট হাত করার জন্য এখন পুরনো রিপাবলিকান ফ্রন্ট ভেঙে যাচ্ছে। চলতি সপ্তাহে ইপসোস-সোপ্রা স্টেরিয়ার এক জরিপে বলা হয়েছে, প্রায় এক তৃতীয়াংশ মেলেনচন ভোটার ম্যাক্রোনকে জয়ী করতে চান। কিন্তু প্রায় অর্ধেক ভোটর এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।

যদি প্রত্যাশিত সংখ্যার চেয়ে বেশি সংখ্যায় ম্যাক্রোনকে ভোট দিতে বিরত থাকে এবং তারা যদি লে পেনকে সমর্থন করে, তবে একটি শক্ত প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে পারেন ম্যাক্রোন। এটি ম্যাক্রোনকে ৪৬ শতাংশ থেকে ৫৪ শতাংশ পর্যন্ত পিছিয়ে দিতে পারে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং ইফপ গবেষণা গ্রুপের পোলিং প্রধান জেরোম ফোরকুয়েট বলছেন, বামপন্থী নির্বাচকমণ্ডলীর হাতে দ্বিতীয় রাউন্ডের ফলাফল নির্ভর করছে। কিন্তু ভোটাররা এএফপির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তাদের সিদ্ধান্তহীনতা কিংবা অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন।

বামপন্থী নান্টেস ইন কমন মুভমেন্টের প্রধান মার্গট মেডকৌর বলছেন, আমার মধ্যে সবকিছুই ইমানুয়েল ম্যাক্রনের বিরোধিতা করে। তিনি অতি ডানপন্থীদের বিরুদ্ধে কোনো প্রাচীর গড়ে তুলতে পারেননি। তিনি স্বৈরাচারী পন্থায় ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন ও মানুষের প্রতি সত্যিকারের অবজ্ঞা দেখিয়েছেন। কিন্তু মেরিন লে পেনের বিকল্প নেই, আমার হাত নোংরা হলেও তাকে ভোট দেব।

মজার বিষয় হল, মেলেনচন নিজেই তার অনুগামীদের ম্যাক্রোনকে সমর্থন করার জন্য অনুরোধ করেননি। তবে ‘লে পেনকে একটি ভোটও নয়’ বলে আহ্বান জানিয়েছেন। ভোটাররা ৪৪ বছর বয়সী ম্যাক্রনের অপছন্দের কথাও তুলে ধরেন।

ম্যাক্রোন পাঁচ বছর আগে একটি কেন্দ্রবাদী প্ল্যাটফর্মে ক্ষমতায় এসেছিলেন। তিনি ‘ডান বা বাম নয়’ এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাজিমাত করেছিলেন।