আপনি পড়ছেন

দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত পর্বের ভোটের মাধ্যমে আগামীকাল রোববার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে যাচ্ছেন ফ্রান্সের ভোটাররা। মূল লড়াইয়ে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোন ও চরম ডানপন্থী প্রার্থী মেরিন লে পেন। দেশটির মুসলিম ভোটারদের মতে, দুজনের কেউই মুসলিমদের প্রতি সহানুভূতিশীল নন বরং মুসলিমদের কোণঠাসা করার দিকেই তাদের নজর। ফলে আগামীকালের ভোট নিয়ে চরম অস্বস্তিতে ভুগছেন তারা। খবর আনাদোলু।

macron and le pen 1দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ম্যাক্রোন ও লে পেন

দেশটিতে আনুমানিক ৬০ লাখ মুসলমান রয়েছে। ভোটের ক্ষেত্রে তারা বড় একটি ফ্যাক্টর। উভয় প্রার্থীই তাদের প্রচারণায় ধর্ম ব্যবহার করেছেন। তবে এ প্রচারণার পুরোটাই গেছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে। ফ্রান্সের মুসলমানরা বলছেন, তাদের জন্য এই ভোট চরম অস্বস্তিকর। বলতে গেলে এটি ‘সবচেয়ে কম খারাপ’ বিকল্প বেছে নেয়ার মতো একটি অবস্থা।

ন্যাশনাল র‌্যালি পার্টির লে পেন বোরখা নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করেছেন, মুসলমানদের জন্য হালালভাবে পশু জবাই নিষিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অন্যদিকে গত কয়েক বছরে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকা মাক্রোন সব ইস্যুতেই মুসলমানদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। দেশটিতে অনেক মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মুসলমানদের ওপর অনেক বেশি কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এ অবস্থায় মুসলমানরা কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়েই চিন্তিত।

french muslimsফ্রান্সে মুসলিমদের বিক্ষোভ

নাইমা নামের প্যারিসের একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী বলেছেন, তিনি লে পেনকে দ্বিতীয় রাউন্ডে আসতে বাঁধা দেয়ার জন্য প্রথম রাউন্ডে বামপন্থী প্রার্থী জিন-লুক মেলেনচনকে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু অনিবার্যভাবে ম্যাক্রন এবং লে পেনই চূড়ান্ত রাউন্ডে প্রার্থী হিসেবে আছেন। বিষয়টি নাইমাকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে।

তিনি বলেন, লে পেনের কথামতো যদি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়, তাহলে আমি আমার বাড়ি থেকে বেরুতে পারবো না, আবার ধারাবাহিক জরিমানাও দিতে পারব না। ফলে আমার একমাত্র বিকল্প হচ্ছে জন্মভূমি ফ্রান্স ছেড়ে চলে যাওয়া! এ অবস্থায় আমি অনিচ্ছা সত্ত্বেও দ্বিতীয় রাউন্ডে ম্যাক্রোনকে ভোট দেব, কারণ এটি মুসলমানদের জন্য ‘মন্দের ভালো’।

তিনি আরো বলেন, ম্যাক্রোন পুনরায় নির্বাচিত হলে ফ্রান্সের মুসলমানদের জন্য ভালো কিছু হবে না, কিন্তু লে পেন সরকারের অধীনে জীবন নিঃসন্দেহে আরও খারাপ হবে।

নাগরিক জোট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য তাউস হামুতি বলেন, গত পাঁচ বছরে মুসলমানদের প্রতি বক্তৃতা এবং রাজনৈতিক কৌশলের মাধ্যমে ম্যাক্রোন ইসলামোফোবিয়াকে বাড়িয়েছেন এবং বৈধতা দিয়েছেন। ক্ষমতায় থাকাকালীন ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি যথেষ্ট অবিচার করেছেন। দুই প্রার্থীর মধ্যে তুলনা করে তাউসের মন্তব্য, আমাদের প্লেগ ও কলেরার মধ্যে সত্যিই পছন্দ নেই। আমি রোববার ম্যাক্রোনকে ভোট দিতে যাব কিন্তু তা হবে আমার মনের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, ম্যাক্রোন সরকারের করা নতুন আইনের অধীনে ৭১৮টি মুসলিম মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, মসজিদ, মুসলিম স্কুল, দোকান ও ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ৪৬ মিলিয়ন ইউরোর সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। ব্রিটিশ এনজিও কেজ এই ক্র্যাকডাউনকে নিপীড়ন হিসাবে বর্ণনা করে এবং ম্যাক্রোনকে সাম্প্রতিক ইতিহাসে ফরাসী মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে নিপীড়ক বলে অভিহিত করেছে।

প্যারিসের মেও হাই স্কুল প্রাইভেট কলেজের পরিচালক হানানে লুকিলি ম্যাক্রোন বা লে পেনকে ভোট দেওয়ার পরিবর্তে ব্যালট ফাঁকা রেখে বা বিরত থাকার পরিকল্পনা করেছেন। কারণ তার মতে, তারা একই রকমের দুটি প্রোফাইল, যা ফ্রান্সের মুসলিম জনগণকে ঘৃণা করে।

প্রথম পর্বের ভোটের পর ম্যাক্রন ২৭.৮ শতাংশ এবং লে পেন ২৩.১ শতাংশ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত পর্বে উঠে আসেন। আগামীকাল ফ্রান্সের লোকজন তাদের মধ্যে থেকে নিজেদের আগামী মেয়াদের প্রেসিডেন্টকে বেছে নেবেন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.