এমবিএসের চাপে বাড়ি-ইয়ট বিক্রি করে দিচ্ছেন সৌদি প্রিন্সরা!

২০১৭ সালে সৌদি যুবরাজ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বর্তমান বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)। তার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই পুরো দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন শুরু হয়। এর অনেকগুলোই সমালোচনা মুখে পড়েছে, তবু তিনি তার কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। তার কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে এমন কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে যে, সৌদির অন্য প্রিন্সরা এখন বাড়ি, ইয়ট, শিল্পকর্ম ইত্যাদি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে এমবিএস দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সৌদি প্রিন্সরা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ৬০ কোটি ডলারেরও বেশি মূল্যের রিয়েল এস্টেট, ইয়ট ও শিল্পকর্ম বিক্রি করেছেন। দেশটির প্রিন্সরা এখন অন্যান্য সম্পদ গড়ার পরিবর্তে নগদ অর্থ সংগ্রহ করার এবং এমবিএস থেকে তদন্ত এড়ানোর চেষ্টা করছেন। তাই তারা সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছেন। সম্প্রতি বিক্রি হওয়া সৌদি রাজপুত্রদের সম্পদের মধ্যে রয়েছে ১৫৫ মিলিয়ন ডলারের ব্রিটিশ কান্ট্রি এস্টেট, ২০০ ফুটেরও বেশি লম্বা দুটি ইয়ট এবং একজন সাবেক রাজার বিয়ের উপহার হিসেবে পাওয়া গহনা।

এমবিএসের কড়াকড়ির কারণে সৌদি রাজপুত্রদের অনেকেই তাদের অতীতের বিলাসবহুল জীবনযাত্রা পাল্টে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন। যুবরাজ মোহাম্মদ বেশ কিছু সংস্কার এনেছেন যা রাজপরিবারের সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে দিয়েছে। আগে তারা সবেতন বিদেশে ছুটি কাটাতে যেতে পারতেন, তাদের সেই সুবিধা রহিত করা হয়েছে।

সৌদি রাজপুত্রের মালিকানায় থাকা একটি ইয়ট

তাদের আবাসস্থলগুলোতে এখন বিদ্যুৎ ও পানির বিল সংযুক্ত করা হয়েছে। সৌদি রাজপুত্রদের এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে বছরে কয়েক মিলিয়ন ডলার খরচ হতো। এছাড়া চলতি বছর চারজন কর্মীর পরে প্রতি গৃহকর্মীর জন্য ২ হাজার ৫০০ ডলার ট্যাক্স চালু করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বিপুল ধন-সম্পদ সংগ্রহের ঐতিহ্যবাহী মাধ্যমগুলোও রাজপুত্রদের জন্য শেষ হয়ে আসছে। আগে যেখানে সৌদি রাজপুত্ররা দ্বিপাক্ষিক বা বহুমুখি চুক্তির ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা রেখে মোটা অংকের অর্থ পকেটে পুরতে পারতেন, তা এখন অতীত। এছাড়া ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ না করা বা জনসাধারণের কাছ থেকে জমি কেড়ে নেওয়াসহ সম্পদের পাহাড় গড়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

সব মিলিয়ে সৌদি রাজপুত্রদের অবস্থান ভালো নয়। তাই নগদ অর্থ সংগ্রহ এবং এমবিএসের নজর থেকে দূরে থাকার জন্য তারা বাধ্য হয়ে নিজেদের আওতায় থাকা বাড়ি, ইয়ট ইত্যাদ বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।