আপনি পড়ছেন

ছাত্রদলে ফের কমিটি গঠনের তোড়জোড় চলছে। সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করার পাশাপাশি আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতিকে সামনে রেখে বরাবরের মতো এবারও দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে ঢেলে সাজাতে চান বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। আর এ কারণেই যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের পাশাপাশি ছাত্রদলের কমিটি গঠনেরও আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে। ছাত্রদল ও তাদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা বিএনপির একাধিক সূত্রে এমন আভাস পাওয়া গেছে। প্রসঙ্গত, আগামী ১৪ অক্টোবর বর্তমান কমিটির (রাজীব-আকরাম) মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

bnp flag

এদিকে নতুন কমিটি গঠনের আলাপ-আলোচনা প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও পছন্দসই পদ পেতে ইতোমধ্যেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা। শীর্ষ দুই পদ দখলে নিতে বর্তমান কমিটির কয়েক সারির নেতাদের লড়াই যেমন চলছে, তেমনি দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের পদের জন্য জুনিয়র নেতারাও ছুটছেন নিজ নিজ বলয়ে। আঞ্চলিক রাজনীতির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক রাজনীতিও প্রভাব ফেলে ছাত্রদলের রাজনীতিতে। সে হিসেবে বরাবরের মতো এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক নেতাদেরই শীর্ষ দুই নেতৃত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে সুপার টু'য়ের দৌড়ে এবার পদপ্রত্যাশী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। বিগত সময়ে পুরনো ঢাকার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল বিশেষ ভূমিকা পালন করে এলেও শীর্ষপদ না পাওয়ার কারণেই হতাশ তারা। এদের মধ্যে এক-এগারোতে বিশেষ ভূমিকা পালনকারী জবির অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ছাত্র মো. আসাদুজ্জামান মিয়া সাধারণ সম্পাদকের পদ প্রত্যাশা করছেন।

আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, বরাবরই ছাত্র রাজনীতি এমনকি জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। অবিবাহিত, নিয়মিত ছাত্র ও কর্মীবান্ধব কমিটি সবার প্রত্যাশা। ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হলে দেশের ক্রান্তিকালে ছাত্রদল রাজপথে সাহসী ভূমিকা রাখবে।

বিশেষ করে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সবকিছুতেই ছিল প্রত্যক্ষ ভূমিকা। যদিও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজ তার জৌলুস অনেকটাই ম্রিয়মাণ। একরাশ প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি দিয়েও সরকারবিরোধী আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারেনি গত দুই মেয়াদের কমিটি। দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব কিংবা ব্যক্তিত্বের সংঘাতেও অনেকবার পথহারা হয়েছে দলটি। তবে এত কিছুর পরও দলের কার্যকরি ভূমিকা রেখে দলকে সঠিক পথে রাখার দায়িত্ব নতুন নেতৃত্বের। আবার এ সংগঠনের নেতৃত্বই বিএনপির আগামীর কাণ্ডারী।

গঠনতন্ত্র অনুসারে ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়া কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মাধ্যমে হওয়ার কথা থাকলেও সাংগঠনিক ক্ষমতাবলে বিএনপি চেয়ারপারসনের অনুমোদন দিয়ে থাকেন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাজীব আহসানকে সভাপতি ও আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫৩ সদস্যবিশিষ্ট (আংশিক) কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। তখন ঘোষণা দেয়া হয়, পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে ২০১ সদস্যবিশিষ্ট। তবে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কেন্দ্রীয় সংসদে ৩৪ জনকে সহ-সভাপতি, ৩০ জনকে যুগ্ম সম্পাদক, ১২৫ জনকে সহ-সাধারণ সম্পাদক, ২৩ জনকে সহ-সাংগঠনিক, ১৪৩ জনকে বিভিন্ন সম্পাদকীয় পদে ও ২৩৫ জনের সদস্য পদ মিলিয়ে মোট ৭৩৬ জনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান কমিটির মেয়াদ এখনো পূর্ণ না হলেও গত কয়েকদিন ধরেই বিএনপি কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন এলাকায় নতুন কমিটি গঠনের খবর ভেসে বেড়াচ্ছে। যে কারণে পদ-প্রত্যাশীরাও শুরু করেছেন তদবির। নিজের পক্ষে সমর্থন আদায়ে কাজ করে যাচ্ছেন দিনরাত। আবার সংগঠনের নীতি নির্ধারকদের সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে বাসায় ধরনা দেয়া নেতার সংখ্যাও বাড়ছে ক্রমাগত। তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন এসব পদপ্রত্যাশী।

যদিও একটি সূত্র জানায়, গঠনতন্ত্রের আলোকে ছাত্রদলের কমিটির মেয়াদ দুই বছর হলেও মূল সংগঠনের চেয়ারপারসন তা না ভাঙ্গা পর্যন্ত চলতে থাকে। তবে ১ জানুয়ারি ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন নতুন কমিটি গঠনের জোর দাবি বরাবরই থাকে। পদপ্রত্যাশী নেতারা সেটাকে ঘিরেই এগোচ্ছেন। দলের দ্বিতীয় সারির এক নেতা জানান, বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই কমিটি গঠনের দাবি উঠলেও তা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কিংবা সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান পর্যন্ত পৌঁছেনি। বরং কারাগারে থাকা দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং আরেক বিএনপির তৃণমূল গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আগামী কয়েক মাস নতুন কমিটি গঠনের দাবি তীব্র হলে বিষয়টি নিয়ে দলীয়প্রধান সরাসরি হস্তক্ষেপ করবেন বলে ওই সূত্রটির দাবি।

এদিকে পদ-প্রত্যাশী কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছাত্রদলের কমিটিতে বরাবরই অঞ্চল রাজনীতি বড় প্রভাব ফেলে। এবারও ব্যতিক্রম তার হবে না। সূত্রটির দাবি, মূলত পৃথক এলাকা থেকে শীর্ষ কয়েকটি পদ নির্বাচন করে ছাত্রদলের রাজনীতি গোটা দেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়। মূলত এটাকেই হাতিয়ার হিসেবে নিয়ে এগোচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা। যদিও সংগঠনটির পিতৃসম দল বিএনপি নেতারাও কাজ করে যাচ্ছেন নিজেদের আস্থাভাজনদের নিয়ে নতুন কমিটিতে দিতে। এ ছাড়াও দলের নতুন নেতৃত্বে নিজ মতাদর্শের ব্যক্তিকে স্থান দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন সাবেক নেতা থেকে শুরু করে প্রবীণ স্থানীয় নেতারাও।

বেশ কয়েকটি সূত্রে পাওয়া তথ্যমতে, বর্তমান কমিটির শীর্ষ নেতা বরিশাল অঞ্চলের হওয়ায় নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে এলাকাটি কম গুরুত্ব পাবে। সে ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেয়ে নেতৃত্বে আসতে পারেন কুমিল্লা-নোয়াখালী অঞ্চলের কর্ণর্ধার ও বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন অর রশিদ মামুন কিংবা মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া। ছাত্রদলের ইতিহাসে শীর্ষ দুই পদে না আসা চট্টগ্রাম থেকে বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি ফেরদৌস আহমেদ মুন্না বা যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিক উঠে আসতে পারেন। এর মধ্যে সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে নৃশংস নির্যাতনের শিকার আশিকের পরিচ্ছন্ন ইমেজ দলে আছে।

এর বাইরে নেত্রকোনা অঞ্চল থেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ও বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, যশোর-ঝিনাইদহ থেকে সহ-সভাপতি আবু আতিক আল হাসান মিন্টু, আলমগীর হাসান সোহান শক্ত অবস্থান রয়েছে। আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দান ও দলের প্রতি একনিষ্ঠতার কারণে সহ-সভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির, মামুন বিল্লাহ, যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান সোহাগ, বায়জীদ আরেফিন, মির্জা ইয়াসিন আলী, মিয়া রাসেল, মেহবুব মাসুম শান্তসহ অনেকেই হেভিওয়েট প্রার্থীর তালিকায়। তবে সবকিছুর ঊধর্ে্ব গত দুই কমিটির মতো এবারও নরসিংদী অঞ্চলের প্রাধান্য বজায় থাকলে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু সভাপতির পদ পেতে পারেন।

যদিও একটি সূত্রের দাবি, বিএনপির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের একটি অংশের চিন্তা বাস্তবায়ন হলে বয়স ও বিবাহিত বিবেচনায় সিনিয়র ও ত্যাগী নেতাদের অনেকেই বাদ পড়বেন। সে ক্ষেত্রে সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক পর্যায়ে থাকা অনেকেই শীর্ষ দুই পদে আসীন হতে পারেন। বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি পুনর্গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মো. শাহজাহান বলেন, রাজনীতির মাঠে টিকে থাকতে হলে নিয়মিত ছাত্রদের নিয়ে গঠন অনেক জরুরি। ছাত্রদলের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রেও সেটা অনুসরণের চেষ্টা করা হবে।

আপনি আরো পড়তে পারেন

বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের সেনা সমাবেশ

প্রশ্ন ফাঁস এড়াতে বন্ধ থাকতে পারে ফেসবুক

বৈদ্যুতিক আগুনে ৪ জনের মৃত্যু

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা: সর্বনিম্ন নম্বর মাইনাস ১৭, সর্বোচ্চ ৮৫

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ৫৬ হাজারেরও বেশি ফেল

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.