গুতেরেসের হোটেলের কাছেই পড়ল রুশ ক্ষেপণাস্ত্র!

ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত নিয়ে আলোচনা করতে মস্কোর পর কিয়েভ সফরে যান জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ওনার সফরকালেই সেখানে বিমান হামলা চালায় রুশ বাহিনী। এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ প্রতিনিধি দল। খবর আল জাজিরা।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন জাতিসংঘ মহাসচিব

জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় আটকে পড়া হাজার হাজার বেসামরিক লোককে সরিয়ে নেওয়ার কাজে গুতেরেস ও তার দল গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্য কিয়েভ সফর করেন। ঠিক এ সময়ে রুশ বাহিনীর হামলার ঘটনায় সবাই বিস্মিত ও মর্মাহত।

কয়েক সপ্তাহ আগে কিয়েভ থেকে মস্কো বাহিনী সরে যাওয়ার পর এটিই ছিল সবচেয়ে সাহসী হামলা। এ হামলায় অন্তত একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, শহরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শেভচেঙ্কিভস্কি জেলায় দুবার ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে, যার ফলে অন্তত দুটি উঁচু ভবনে আগুন লেগেছে।

বিধ্বস্ত ও জনশূন্য মারিওপোল

জাতিসংঘের মানবিক দপ্তরের মুখপাত্র স্যাভিয়ানো আব্রেউ বলেন, এটি একটি যুদ্ধ এলাকা ঠিকই। কিন্তু এটা আমাদের এত কাছাকাছি ঘটেছে, যা উদ্বেগজনক।

এ ঘটনায় ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিন্দা জানিয়ে বলেন, কিয়েভে জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলের সাথে আমাদের আলোচনা শেষ হওয়ার পরপরই রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শহরে আঘাত হানে। জাতিসংঘ এবং সংস্থাটি যারা প্রতিনিধিত্ব করে তাদের জন্য বিষয়টি খুবই অবমনানাকর। এর একটি শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দরকার।

কিয়েভ সফরে আসার আগে গুতেরেস রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে আলোচনায় বসেন। এ সময় পুতিন মারিওপলের আজভস্টাল প্ল্যান্টটি থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক কমিটি ফর রেড ক্রসের (আইসিআরসি) সাথে নীতিগতভাবে সম্মত হন।

মারিওপল সিটি কাউন্সিল জানায়, রাশিয়ার গোলাবর্ষণ এবং অস্বাস্থ্যকর অবস্থার কারণে শহর জুড়ে প্রায় এক লাখ লোক মানবেতর জীবন যাপন করছে এবং পানি ও খাবারের তীব্র অভাবের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

গুতেরেস বলেন, মারিওপল একটি সংকটের মধ্যে আরেক সংকট। সেখানে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিকের জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রয়োজন। অনেকেই বয়স্ক, চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন বা তাদের চলাফেরা সীমিত। ওই স্থান থেকে তাদের সরে যাওয়া দরকার। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।

তবে মারিওপলের স্থানীয় গভর্নর বলেছেন, রাশিয়া আহত ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের ইস্পাত কারখানা থেকে সরিয়ে নেওয়া থেকে বাধা দিচ্ছে। তারা এ সুযোগটি ব্যবহার করে আজব রেজিমেন্টের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের ধরতে চায়। তাই তারা আহত ইউক্রেনীয় সৈন্যদের সরিয়ে নেওয়ার কোনো সুযোগ দিতে আগ্রহী নয়।

অন্যদিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, বেসামরিক ব্যক্তিদের প্ল্যান্ট ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে যাওয়ার সময় তাদেরকে অস্ত্র সমর্পণ করতে বলা হয়েছে।