বিশ্বকে আখুনজাদা: তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিন

তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবারও আফগান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক বাহিনী প্রত্যাহারের পর গত বছরের আগস্টে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় তালেবান। আজ শুক্রবার ঈদ-উল-ফিতরের ছুটির আগে লিখিত বার্তায় তিনি বলেন, মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাসের সমাপ্তি হচ্ছে। যথাযথ কূটনৈতিক সম্পর্ক দেশের সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে। গন্ধরা নিউজ।

হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা

কোনো দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবান সরকারকে এখনও স্বীকৃতি দেয়নি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের শর্ত ছিল নারীর অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। তালেবান বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ পর্যায়ে মেয়েদের শিক্ষা কার্যক্রমের নির্দেশনা দিলেও মাধ্যমিক পর্যায়ের নারী শিক্ষার্থীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।

১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার সময়ে তালেবান নারীর চলাফেরার স্বাধীনতা সংকীর্ণ করে ফেলে। তবে ২০২১ সালের আগস্টে নতুন করে ক্ষমতায় আসার তাদের বেশ সহনশীল হতে দেখা যায়। নারীর অধিকারও পূর্ণাঙ্গ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তবে কোনো এক কারণে মাধ্যমিক পর্যায়ের মেয়েদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে দেরি করে ফেলেছে তালেবান সরকার।

তালেবান সরকার সরকারি চাকরি থেকে হাজার হাজার নারীকে বরখাস্ত করে এবং তাদের দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করে। এমনকি নিজ দেশের মধ্যে নারীরা পুরুষ আত্মীয় ছাড়া ভ্রমণে বের হতে পারে না। গত মার্চ মাসে মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে পুনরায় খোলার অনুমতি দেওয়ার কয়েক ঘন্টা পরেই তা বন্ধ করে দেয়। এতে সমালোচনার ঢেউ শুরু হয় পুরো বিশ্বে।

আখুন্দজাদা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলেন, নারীদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়টি একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার' হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা নারীকে সম্মান করি এবং আফগানিস্তানে নারী ও পুরুষের সকল শরীয়া অধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই মানবিক ও মানসিক সমস্যাটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন না।

তিনি বলেন, বিশ্বনেতাদের উচিত তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া, যাতে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এবং কূটনৈতিক নিয়ম ও নীতির মধ্যে আমাদের সমস্যার সমাধান করতে পারি। বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতায় আফগানিস্তানের ভূমিকা রয়েছে। এই প্রয়োজনেই আফগানিস্তানের ইসলামিক এমিরেটকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।

আফগানিস্তান সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বোমা হামলার মুখোমুখি হয়েছে। ইসলামিক স্টেট সশস্ত্র গোষ্ঠী এসব হামলার দাবি করেছে। সংখ্যালঘু শিয়া হাজারা সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে প্রায়ই হামলা হচ্ছে।

আখুন্দজাদা তার দেওয়া লিখিত বার্তায় আফগানিস্তানের ক্ষয়প্রাপ্ত নিরাপত্তা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেননি। বরং তার দাবি, তালেবান ‌'একটি শক্তিশালী ইসলামি ও জাতীয় সেনাবাহিনী' এবং 'একটি শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা' গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে।