রাশিয়ার জ্বালানি: পুতিনের শর্ত মেনে নিলো জার্মানি-অস্ট্রিয়াসহ ১০ দেশ

দুই মাসব্যাপী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের এক পর্যায়ে যখন বিশ্বের নানা দেশ রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছিল, মস্কো তখন ঘোষণা করে অবন্ধু দেশগুলোকে এখন থেকে জ্বালানির দাম রুবলে পরিশোধ করতে হবে। কিছুটা গড়িমসি করলেও শেষ পর্যন্ত জার্মানি অস্ট্রিয়াসহ ১০ দেশ ওই শর্তে রাজি হয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

পুতিন হঠাৎ করেই শর্ত দেন রুবলে গ্যাসের দাম পরিশোধ করতে হবে

রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন হঠাৎ করেই ঘোষণা দেন, ডলার বা ইউরোতে নয় তেল-গ্যাসের দাম পরিশোধ করতে হবে রুশ মুদ্রা রুবলে। প্রথমে পুতিনের এ শর্তকে পাত্তাই দিতে চায়নি ইউরোপের দেশগুলো। রুশ জ্বালানি সরবরাহকারী সংস্থা গ্যাজপ্রমও জানিয়ে দেয়, মস্কোর সহযোগী নয় এমন দেশগুলোকে তেল কিনতে হলে অবশ্যই দাম মেটাতে হবে রুবলে। এ জন্য গ্যাজপ্রমের ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।

সে সতর্কবার্তাকে বাস্তবে রূপ দিতেই নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পর পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় মস্কো। দেশদুটি এর পেছনে ভিন্ন কারণ রয়েছে দাবি করলেও গ্যাজপ্রম জানায়, পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়া জ্বালানির মূল্য রুবেলে দিতে পারেনি বলেই ওই দুই দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

গ্যাজপ্রম

এরপরই নড়েচড়ে বসে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাসের গ্রাহক রাষ্ট্রগুলো। মস্কোর শর্ত মেনেই জ্বালানি কেনার জন্য তারা লাইন দিয়েছে গ্যাজপ্রমের ব্যাংকে। এ তালিকায় জার্মানি ও অস্ট্রিয়ার মতো দেশের নাম রয়েছে সর্বাগ্রে।

জার্মান সংস্থা ইউনিপার জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই ইউরোপে একটি রুশ ব্যাংকের শাখায় তারা অ্যাকাউন্ট খুলেছে। তার মাধ্যমেই জ্বালানির দাম মেটানো হবে। একই রকম বার্তা দিয়েছে অস্ট্রিয়ার জ্বালানি সংস্থা ওএমভিজেএফ-এর পক্ষ থেকেও। ইতালির একটি জ্বালানি সংস্থাও রুবেলে দাম মেটানোর জন্য রুশ ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলেছে বলে জানা যায়।

বৃহস্পতিবার মস্কো জানায়, জ্বালানির দাম মেটানোর জন্য ইউরোপের অন্তত ১০টি কোম্পানি রুশ জ্বালানি সংস্থা গ্যাজপ্রমের ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলেছে।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চললেও অনানুষ্ঠানিক যুদ্ধ আসলে চলছে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। রাশিয়াকে চেপে ধরার সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি ওয়াশিংটন। নিজে যেমন রাশিয়ার ওপর নানা ধরনের অবরোধ-নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তেমনি অন্যদেরও বাধ্য করেছে সে ধারা অবলম্বন করতে।

তবে সবচেয়ে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছিল তেল-গ্যাসসহ নানা ধরনের জ্বালানি কেনাবেচা প্রশ্নে। তবে ইউরোপের দেশগুলোর সাম্প্রতিক কার্যক্রমে পুতিনের শর্ত মেনে নেওয়ার যে ধারা দেখা দিয়েছে, তাতে ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা দুর্বল হয়ে পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।