আয়া সোফিয়ায় শবে কদরের স্মৃতি ফিরল ৮৮ বছর পর

তুরস্কের বিশ্বখ্যাত আয়া সোফিয়া গ্র্যান্ড মসজিদে আবারও লাইলাতুল কদরের স্মৃতি ফিরে এসেছে। দীর্ঘ ৮৮ বছর পর গত বুধবার রমজান মাসের মহিমান্বিত এ রাত উদযাপন করেন মুসল্লিরা। মহা সম্মানিত ওই রাতে আয়া সোফিয়ায় নামাজ পড়িয়েছেন মিসরের বিখ্যাত কারি ড. আহমাদ নায়িনা।

আয়া সোফিয়ায় লাইলাতুল কদরের নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা

গত বুধবার তুরস্কসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ‘শবে কদর’ উদযাপিত হয়। পবিত্র এ রাতে আয়া সোফিয়ায় উপস্থিত হন হাজার হাজার মুসুল্লি। এশার নামাজের পর পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ‘মুক্বরিউর রুআসা’ বা রাজাদের কারী বলে খ্যাত শায়খ ড. আহমাদ নাায়িনা । অন্তত ৪০টি দেশে এই তেলাওয়াত অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়।

আহমাদ নায়িনা মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট জামাল নাসেরকে তিনি শৈশবে কুরআন তেলাওয়াত শুনিয়েছেন। তাছাড়া সাবেক আরো দুই প্রেসিডেন্ট আনওয়ার সাদাত ও হোসনি মোবারকের সামনেও একাধিকবার তেলাওয়াত করেছেন তিনি। এ কারণে তার উপাধি ‘মুক্বরিউর রুআসা’ বা রাজাদের কারী।

আয়া সোফিয়া ও ডা. আহমাদ নায়িনা

প্রায় নয় দশক পর এবারের রমজানে প্রথমবারের মতো আয়া সোফিয়ায় তারাবি নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ৮৬ বছর ধরে জাদুঘর হিসেবে ভূমিকা রাখার পর ২০২০ সালের ২৪ জুলাই আয়া সোফিয়াকে নামাজের জন্য খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর সেখানে নামাজের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।

সম্প্রতি ব্যাপকভাবে করোনা টিকাপ্রদান, মৃত্যুসংখ্যা হ্রাস ও সুস্থতার হার বৃদ্ধি পাওয়ায় তুরস্কের সরকার সব মসজিদ খুলে দিয়েছে। ফলে ৮৮ বছর পর আয়া সোাফিয়ায় পালিত হয় লাইলাতুল কদর।

ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া নির্মিত হয় ৫৩২ সালে। ১৪৫৩ সালে ইস্তাম্বুল বিজয়ের আগ পর্যন্ত ৯১৬ বছর ধরে তা ব্যবহৃত হয় খ্রিস্টানদের গির্জা হিসেবে। ১৪৫৩ সাল থেকে তা মসজিদ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। এ যাত্রা চলে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত। এরপর এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়। ৮৬ বছর ঐতিহাসিক এ স্থাপনাটি জাদুঘর হিসেবে পরিচিত হয়।

১৯৮৫ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় আয়া সোফিয়াকে। ২০২০ সালে এটি আবার ফিরে আসে মসজিদের ভূমিকায়। সে বছরের ১০ জুলাই তুরস্কের একটি আদালত জাদুঘর রূপান্তরবিষয়ক আদেশ বাতিল করে আয়া সোফিয়াকে পুনরায় মসজিদ হিসেবে ব্যবহার নির্দেশনা দেয়।