বৃষ্টি উপেক্ষা করেই শোলাকিয়ায় ঈদের বড় জামাত

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে এবারো লাখ লাখ মানুষ ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। আজ মঙ্গলবার, ৩ মে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই স্থানীয় ও আশপাশের জেলাগুলো আসা কয়েক লাখ মুসল্লি এখানে নামাজ আদায় করেন। বৃষ্টির মধ্যেও শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

বৃষ্টি উপেক্ষা করেই শোলাকিয়ায় ঈদের বড় জামাত

প্রতিবছরের মতো এবারো সেখানে সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছর ঈদুল ফিতরের ১৯৫তম জামাত অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহাসিক এই ঈদগাহ ময়দানে। এতে ইমামতি করেন শায়েখ মাওলানা শোয়াইব বিন আব্দুর রউফ। যদিও বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদের ইমামতি করার কথা ছিল। কিন্তু অসুস্থ থাকায় জামাতে যেতে পারেননি বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বড় ঈদগাহ, বড় জামাত। একসঙ্গে অনেক বেশি মুসল্লি জামাতে নামাজ আদায় করলে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি— এমন বিশ্বাস থেকেই এখানে ঈদের নামাজ পড়তে আসে মানুষ। শুধু কিশোরগঞ্জ জেলা নয়, কুমিল্লা, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, কুষ্টিয়া, বরিশাল, মেহেরপুর, যশোর তথা দেশের ৬৪টি জেলার মানুষ শোলাকিয়ায় নামাজ আদায়ের জন্য দুই দিন আগ থেকেই আসতে শুরু করেন।

অনেকে আত্মীয়-স্বজন, শহরের মসজিদগুলো, আবাসিক হোটেল কিংবা ঈদগাহ মাঠে খোলা আকাশের নিচে আগে থেকেই আশ্রয় নেন ঈদের জামাতে অংশ নিতে। এ ছাড়া আশপাশের জেলাগুলো থেকে বাস, ট্রেন, ট্রাক, মাইক্রোবাস, রিকশা, মোটরসাইকেল, সাইকেল, এমনকি পায়ে হেঁটে আগের রাত কিংবা ফজরের পর থেকেই লোকজন আসতে থাকেন শোলাকিয়া ময়দানে।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় নামাজ শুরু হয়। তবে তার আগেই শোলাকিয়া মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মূল মাঠের বাইরে আশপাশের রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, নরসুন্দা নদীর পারে নামাজের কাতার করে দাঁড়িয়ে যান মুসল্লিরা। ঐতিহাসিক ঈদগাহ ময়দানের রীতি অনুযায়ী নামাজ শুরুর ১৫ মিনিট আগে পর পর তিনবার শটগানের গুলি ছুড়ে মুসল্লিদের নামাজে দাঁড়ানোর সংকেত দেওয়া হয়। নামাজ শেষে বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়।

শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ, শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতা ও সুধীজন প্রমুখ এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেন।