দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে বিগত দুই বছর দেশের ঈদগাহগুলোতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। এবার করোনা বিষয়ক কোনো বিধিনিষেধ না থাকায় সারাদেশের ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরাবরের মতো এবারো দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দানে।

দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদগাহ দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত

আজ মঙ্গলবার, ৩ মে, সেখানে একসঙ্গে অন্তত ৬ লাখ লোক ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। আয়োজকরা দাবি করেছেন, এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত। এদিন নির্ধারিত সময় সকাল ৯টায় ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এই ঈদের জামাতের আয়োজন করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেশের বৃহৎ এই ঈদের জামাত উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বিগত প্রায় ১৫ দিন ধরে চলে ঈদ জামাত আয়োজনের প্রস্তুতি। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ঘেরাও করা হয় পুরো মাঠটিকে। মাঠের চার পাশে মোট ১৯ গেট রাখা হয়। লাগানো হয় ৫০টি সিসি ক্যামেরা। পুরো মাঠের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রায় ১০০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন ছিল বলে জানান দিনাজপুরের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন। এ ছাড়া র্যা ব সদস্যদের পাশাপাশি মোতায়েন ছিল বিপুল সংখক আনসার সদস্যও। মাঠের দুই প্রান্তে স্থাপন করা হয়েছিল দুটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে বৃহৎ এই জামাতে নামাজ আদায় করতে পারায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আগত মুসল্লিরা।

জানা যায়, ঈদের জামাত সকাল ৯টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ভোর থেকেই লোকজন গোর-এ শহীদ ময়দানে হাজির হতে থাকে। এমনকি পুরো মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় ৯টা বাজার আগেই। শুধু দিনাজপুর নয়, আশপাশের অন্যান্য জেলা যেমন- রংপুর, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড়— বরিশাল ও যশোরের মতো দূরের জেলা থেকেও এই ঈদগাহ মাঠে নামাজ আদায় করেন।

দেশের সবচেয়ে বড় এই ঈদ জামাতে অংশ নেন বিচারপতি এনায়েতুর রহিম, তার ভাই সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংদের হুইপ এম ইকবালুর রহিম। এ ছাড়া দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী, দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও অন্যান্য দলের নেতা এবং সরকারি কর্মকর্তারাও গোর-এ শহীদ ময়দানের এই ঈদের নামাজে অংশ নেন।

ঈদ জামাতের ইমামতি করেন মাওলানা শামসুল আলম কাশেমী। নামাজের শেষে অনুষ্ঠিত মোনাজাতে দেশ ও মুসলিম উম্মাহ এবং গোটা বিশ্ব মানবতার জন্য দোয়া করা হয়। সবার জন্য মহান আল্লাহর দরকারে মঙ্গল কামনা করা হয়।

সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংদের হুইপ ইকবালুর রহিম নামাজ আদায় শেষে সংবাদ মাধ্যমকে জানান, গোর-এ শহীদ ময়দানে আজ প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। এই ঈদ জামাত দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্ববহৎ বলে দাবি করেন তিনি। সফলভাবে ঈদের জামাত সম্পন্ন করতে পারায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এই রাজনীতিক।