টোল নিয়ে এমপির ছেলের বরযাত্রীদের সঙ্গে সংঘর্ষ, নববধূসহ আহত ১০

সেতুর টোল দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্টাফদের সঙ্গে এক সংসদ সদস্য, এমপির ছেলের বরযাত্রীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নববধূসহ ১০ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও সেতু কর্তৃপক্ষ পাল্টা বরযাত্রীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ এনেছে।

লেবুখালী সেতুতে এমপির ছেলের বরযাত্রীদের সঙ্গে টোল আদায়কারীদের সংঘর্ষ

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার লেবুখালী নদীর পায়রা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে টোল প্লাজায় এ ঘটনা ঘটে। বর হলেন পটুয়াখালীর সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য কাজী কানিজ সুলতানা হেলেনের ছেলে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র্যা ব সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন বলে জানা গেছে।

ঘটনাটিকে পরিকল্পিত অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ নেতা কাজী হেলেন জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তার বড় ছেলে মাহিন তালুকদার নতুন বউ নিয়ে বরিশাল থেকে পটুয়াখালীতে ফিরছিলেন। এ সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে টোল আদায়কারীরা বরযাত্রীদের ওপর হামলা করে। অথচ পটুয়াখালী থেকে যখন তারা বরিশাল যাচ্ছিলেন তখন পায়রা সেতুর টোল প্লাজার লোকজনের সঙ্গে কথা হয়। ওই সময় তারা হাসতে হাসতে বিয়ের মিষ্টি এবং বখশিশ দাবি করেন।

তিনি আরো বলেন, ওই সময় তার ছোট ছেলে ফেরার পথে মিষ্টি ও বখশিশ দেওয়ার কথা বলে যান। তাহলে যাওয়ার সময় যেখানে কিছু হলো না, সেখানে পটুয়াখালীতে ফেরার পথে টোল প্লাজার স্টাফরা হঠাৎ তার দুই ছেলের কেন বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লেন। এতে বোঝা যায় এটি পরিকল্পিত। ঘটনার এক পর্যায়ে স্টাফরা ছোট ছেলের বন্ধু মেরিন ইঞ্জিনিয়ার আশিককে টেনেহিঁচড়ে টোল প্লাজার নিচতলায় নিয়ে বেদম মারধর করে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

কাজী হেলেন আরো অভিযোগ করেন, ঘটনার সময় তার পুত্রবধূর ডান হাতের তিন আঙুলের ফলস নখ নিয়ে যায় হামলাকারীরা। এ ছাড়া তার হাতের স্বর্ণের বালাও নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এতে তার পুত্রবধূ ডান হাতে প্রচণ্ড আঘাত পান। পাশপাশি হামলাকারীরা ইঞ্জিনিয়ার আশিকের আইফোন, ড্রাইভারের স্মার্টফোন এবং এমপির গাড়ির ভিআইপি হর্ন নিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে মামলা করবেন জানিয়ে সংরক্ষিত আসনের এই সংসদ সদস্য অভিযোগ করেন, ঘটনার সময় টোল প্লাজার বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কাজেই বোঝা যায়, ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত ডাকাতি। এ ঘটনার কয়েক দিন আগে বিএনপির প্রোগ্রামের সময় টোল ফ্রি করে দেওয়া হয়। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এমপির ছেলের বিয়ের বহরে হামলা হয়। সুতরাং বোঝার বাকি থাকে না, এই হামলাকারী কারা।

এ বিষয়ে টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আসাদুজ্জামান বলেন, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে জানা যায়, ব্রিজ পার হয়ে একটি বিয়ের গাড়িসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি টোল প্লাজার সামনে আসে। এ সময় টোল চাইলে কয়েকজন গাড়ি থেকে নেমে তারা এমপির লোক বলে পরিচয় দেন। তারা আসলে এমপির লোক কি না- সে বিষয়ে খোঁজখবর নিতেই কয়েকজন যুবক স্টাফদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে এবং এক পর্যায়ে তাদের মারধর শুরু করে। এতে বেশ কয়েকজন স্টাফ আহত হন। এমনকি ওই যুবকরা অফিস রুমে এসেও স্টাফদের মারধর করেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আমরা বিষয়টি অবহিত করেছি।

ঘটনার বিষয়ে দুমকী থানার ওসি আব্দুস সালাম জানান, সেতু এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। কোনো পক্ষই এখন পর্যন্ত অভিযোগ করেনি। ঘটনার বিষয়ে জানতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই জনকে থানায় আনা হয়েছিল। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।