চীন নীতিতে পরিবর্তন আনছে দ. কোরিয়া!

দক্ষিণ কোরিয়া তার চীন নীতিতে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের নেতৃত্বে দক্ষিণ কোরিয়া দেশের আমদানিতে বৈচিত্র্য আনতে চাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে তিনি চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে চান। একইসাথে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করতে চাচ্ছে। এপি, রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড।

চীন নীতিতে পরিবর্তন আনছে দ. কোরিয়া!

বর্তমানে চীন দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার। গত বছরের মোট বাণিজ্যের ২৫ শতাংশই ছিল চীনের। মালয়েশিয়াভিত্তিক নিউজ পোর্টাল দ্য স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরপরেই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। দক্ষিণ কোরিয়া মোট আমদানির ১৫ শতাংশ করে থাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

খবরে বলা হচ্ছে, ইউনের নতুন রক্ষণশীল প্রশাসনকে চীনের বিদেশ নীতির ক্ষেত্রে আরও বেশি আক্রমণাত্মক হতে দেখা যাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে প্রেসিডেন্টের একজন উচ্চ-পর্যায়ের সহকারী বলেন, আমাদের আমদানিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে। সরবরাহ লাইনে অন্যান্য দেশের সাথেও কাজ করতে হবে।

করোনভাইরাস মহামারিকালে প্রতিটি দেশ এখন ছুটছে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্যে চাহিদা মেটাতে সরবরাহ লাইন সুরক্ষিত করতে চাচ্ছে সকল দেশ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রেসিডেন্টের এক সহকারী বলেন, এটি এমন একটি সময়, যেখানে জাতীয় স্তরে সরবরাহ লাইন পরিচালনা করার সক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটিই এখন অর্থনৈতিক নিরাপত্তার মূল বিষয়।

দক্ষিণ কোরিয়া বর্তমানে আমদানি খাতে চীনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, গত বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে দক্ষিণ কোরিয়ার আমদানি করা ১২ হাজার ৫৮৬ আইটেমের মধ্যে ৩ হাজার ৯৪১টি আনতে হয়েছে চীন থেকে।

কোরিয়া ইন্সটিটিউট ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক্স অ্যান্ড ট্রেডের সিনিয়র গবেষক কিম বা উ বলেছেন, চীনের বাইরেও পর্যাপ্ত গ্যাসের মজুদ রয়েছে। চীন থেকে দূরে সরে যাওয়ার আরেকটি কারণ হল, ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তিতে যোগদানের জন্য আনুষ্ঠানিক আবেদন করার পরিকল্পনা করছে দক্ষিণ কোরিয়া। এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো মূলত উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকার পাশাপাশি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত।

মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্কের মতে, টিপিপি থেকে দক্ষিণ কোরিয়া বছরে ৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাণিজ্য করতে পারবে। অপরদিকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া ‘রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ-আরসিইপি’ চুক্তিতে যোগদানের পর দক্ষিণ কোরিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সাথে অর্থনৈতিক সহযোগিতাও বাড়াতে চাচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট পদে ইউন আসার পর সিউল এবং বেইজিংয়ের মধ্যে ভবিষ্যৎ সম্পর্কের বিষয়ে অসংখ্য প্রশ্ন উঠছে। তিনি পূর্বসূরি মুন জে-ইনের চেয়ে চীনের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।