দক্ষিণ ইউক্রেনে চালু হচ্ছে রাশিয়ার পাসপোর্ট!

দক্ষিণ ইউক্রেনের খেরসন ও জাপোরিজঝিয়া অঞ্চলে চালু হচ্ছে রাশিয়ার পাসপোর্ট। অঞ্চল দুটি দখলের পর রুশ পাসপোর্ট চালুর নির্দেশনা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের নাগরিকত্ব এবং তাদের পাসপোর্টপ্রাপ্তির প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে বুধবার একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন পুতিন। বিবিসি, আল-জাজিরা।

রাশিয়ার পাসপোর্ট

এই ডিক্রির মাধ্যমে ইউক্রেনকে ‘রাশিয়ান’ করার প্রক্রিয়ায় আরো একধাপ এগিয়ে গেলো ক্রেমলিন। বলা হচ্ছে, এর দরুন খেরসন ও জাপোরিজঝিয়ার সঙ্গে ২০১৪ সালে দখলকৃত ক্রিমিয়ার সঙ্গে ‘স্থলসেতু’ নির্মাণ সম্পন্ন হবে।

এদিকে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছে, অবৈধ পাসপোর্ট ইস্যুর মাধ্যমে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের নিয়মনীতির স্পষ্ট লঙ্ঘন করছে রাশিয়া। এ ‘অপরাধী’ আচরণের জন্য ক্রেমলিনকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

পুতিনের এ পদক্ষেপ ইউক্রেনের দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়া-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য চলমান একটি প্রকল্পের সম্প্রসারিত রূপ। দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে ২০১৯ সাল থেকে প্রায় আট লাখ পাসপোর্ট ইস্যু করেছে রাশিয়া। পাসেপোর্টের জন্য আবেদনকারীদের রাশিয়ায় বসবাস করার প্রয়োজন হয় না। অর্থ থাকার প্রমাণ কিংবা রাশিয়ান ভাষা জানারও প্রয়োজন নেই।

রাশিয়া মার্চের মাঝামাঝি ক্রিমিয়ার উত্তরে খেরসন অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছে এবং উত্তর-পূর্বে জাপোরিজঝিয়া অঞ্চলের কিছু অংশ দখল করেছে। খেরসনে ইউক্রেনের গভর্নরকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। গত সোমবার ইউক্রেনীয় মুদ্রা রিভনিয়ার পাশাপাশি রুবলকে সরকারি মুদ্রা হিসাবে চালু করেছে খেরসন কর্তৃপক্ষ।

দনবাসের ৪০টির বেশি শহরে গোলাবর্ষণ

দনবাসে কোনো প্রতিরোধেই মস্কোকে ঠেকাতে পারছে না কিয়েভ। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, রুশ সেনাবাহিনী পূর্ব দনবাস অঞ্চলের ৪০টিরও বেশি শহরে গোলাবর্ষণ করেছে। এতে স্কুলসহ অর্ধশতাধিক বেসামরিক স্থাপনা ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পাশাপাশি রাশিয়ার বোমার আঘাতে কমপক্ষে পাঁচ ব্যক্তি নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছে বলে খবরে বলা হচ্ছে।

রাশিয়ান বাহিনী লিসিচানস্ক শহরে অবস্থানরত ইউক্রেনীয় বাহিনীকেও তিন দিকে থেকে আক্রমণ শুরু করছে। এই দুই শহর পতনের পরে পুরো লুহানস্ক প্রদেশ রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইউক্রেনের আরেকটি শহর প্রায় অবরুদ্ধ

বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের সেভেরোদোনেস্ক দখলে নিতে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে রুশ সেনারা। শহরটি চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলার দাবি করেছে রুশযোদ্ধারা। তবে পূর্ব ইউক্রেনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা এ দাবি অস্বীকার করে বলেছেন, পূর্বাঞ্চলে ইউক্রেনের সেনাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা গুরুত্বপূর্ণ একটি সংযোগ সড়ক এখনও দখলে নিতে পারেনি রাশিয়া।

ওই সড়কটি দখল নিতে পারলেই সেভেরোদোনেস্কের সঙ্গে ইউক্রেনের অন্য শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এই অঞ্চলের সামরিক প্রশাসনের প্রধান শেরহি হাইদি দাবি করেছেন, লুহানস্কের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি।

রাশিয়ার অন্যতম লক্ষ্য হলো সেভেরোদোনেস্ক দখলে নেওয়া। বড় এই শহরটির উপকণ্ঠে তীব্র লড়াই চলছে। রুশ সেনারা যদি সেভেরোদোনেস্ক থেকে বাখমুটের রাস্তাটি দখলে নিতে পারে তবে পুরো শহরটি ঘিরে ফেলতে সক্ষম হবে।