সেই সিধুর আয় এখন দৈনিক ৩০-৯০ রুপি!

এক দেহে তার অনেক পরিচয়। সাবেক ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার, রাজনীতিবিদ, বিধায়ক, টিভি শোয়ের বিচারকসহ আরো অনেক পরিচিতি। এবার তার সাথে নতুন আরেকটি পরিচিতি যোগ হতে যাচ্ছে। আর তা হচ্ছে কেরানি। বলা হচ্ছে ভারতের আলোচিত ব্যক্তিত্ব নভজ্যোৎ সিং সিধুর কথা। তার দৈনিক আয় এখন ৩০-৯০ রুপি।

নভজ্যোৎ সিং সিধু

সম্প্রতি ৩৪ বছরের পুরোনো এক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাগারে গেছেন কংগ্রেস নেতা নভজ্যোৎ সিং সিধু। ঘাড়ে তার এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডের ভার। গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এএম খানউইলকর এবং বিচারপতি এসকে কওলের ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য সিধুর উপর ওঠা খুনের অভিযোগ খারিজ করে দেন। কিন্তু কৃত অপরাধকে গুরুত্ব দিয়ে পাঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে এক বছরের সশ্রম ভোগ করতে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

সেখানে তার আগের অভিজ্ঞতাের কোনোটিই কাজে আসছে না। তাকে দেওয়া হচ্ছে কেরানির কাজ। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে পাতিয়ালা জেলে এখন থেকে তিনি সে কাজই করবেন। দৈনিক মজুরি পাবেন ৩০-৯০ রুপি। অবশ্য প্রথম থেকেই পাবেন না। কিছুদিন তাকে বিনা মজুরিতে কাজ করতে হবে। এ সময়টা তিনমাস। এরপর দৈনিক ৩০ থেকে ৯০ রুপি পর্যন্ত পাবেন। ঠিক কত পাবেন তা নির্ভর করবে তাঁর কার্যক্ষমতার ওপর। দিনে আট ঘণ্টা কাজ করতে হবে প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটারকে।

আদালতের পথে সিধু

নিরাপত্তার কারণে নিজ সেলে বসেই কেরানির কাজ করতে হবে। কোর্টের রায় কীভাবে সংক্ষেপে লিখতে হবে; জেলের নথি, পরিসংখ্যান কীভাবে রাখতে হবে সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে তাকে। তার কয়েদি নম্বর ২৪১৩৮৩।

তবে সিধুর জন্য বিশেষ ডায়েটের ব্যবস্থা করা হয়েছে জেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে। তাকে অলিভ তেল দিয়ে রান্না করা খাবার পরিবেশন করা হবে। সকাল শুরু হবে রোজমেরি চা আর ডাবের পানি দিয়ে। এরপর দেওয়া হবে ল্যাকটোজ ফ্রি দুধের সঙ্গে চিয়া, সূর্যমুখী, ফ্লাক্স সিড। সঙ্গে থাকবে আমন্ড। এরপর দেওয়া হবে বিটরুট বা অ্যাভোকাডের জুস। সঙ্গে থাকবে কিউয়ি, তরমুজ, আপেল বা পেয়ারার মতো কোনো ফল। দুপুরে থাকবে পানিফল আর বাজরার আটার রুটি, সঙ্গে সবজি। সন্ধ্যায় ছানা বা টোফু, এক কাপ চা (চিনি ছাড়া)। রাতের খাবারে থাকবে এক বাটি সবজি ও ডালের স্যুপ।

উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে এক ঘটনার জেরে জেল হয়েছে সিধুর। সে সময় গুরনাম সিং নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন সিধু। একপর্যায়ে গুরনামের ওপর চড়াও হন সিধু। মাথায় আঘাত করলে গুরনামের মৃত্যু হয়। সিধুর বিরুদ্ধে গুরনামের পরিবার খুনের অভিযোগে মামলা রুজু করে। তবে ওই মামলায় খালাস পেয়ে যান সিধু। আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় গুরনামের পরিবার। আর তার জেরেই সিধু এখন জেলের অধিবাসী।