চুক্তির সীমার চেয়ে ইরানের কাছে ১৮ গুণ বেশি ইউরেনিয়াম!

২০১৫ সালে বিশ্বের ছয় পরাশক্তির সাথে চুক্তিতে তেহরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার যে সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল, বর্তমানে ইরানের কাছে তারচেয়ে ১৮ গুণ বেশি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। গতকাল সোমবার জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা তাদের এই অনুমানের কথা জানায়। খবর আরব নিউজ।

ইরানের একটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কারখানা

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ব্যাপারে তার সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলেছে, ২০২২ সালের ১৫ মে ইরানের কাছে ইউরেনিয়াম মজুদ ছিল আনুমানিক ৩ হাজার ৮০৯ দশমিক ৩ কিলোগ্রাম। ২০১৫ সালে বিশ্বশক্তির সাথে করা চুক্তিতে ২০২ দশমিক ৮ কেজি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কথা বলা হয়েছিল।

আইএইএ-এর প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ইরান চুক্তিতে উল্লেখ করা ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ সীমার চেয়ে বেশি মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে ইরানে এখন ২০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ ২৩৮ দশমিক ৪ কেজি, যা গত মার্চ মাসে করা শেষ রিপোর্ট থেকে ৫৬ দশমিক তিন কেজি বেশি।

ইরান ও আইএইএ

অন্যদিকে, ৬০ শতাংশে সমৃদ্ধ হওয়া ইউরেনিয়ামের পরিমাণ ৪৩ দশমিক ১ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ, তিন মাস আগের রিপোর্টের তুলনায় ৯ দশমিক ৯ কেজি বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখ্য, পারমাণবিক অস্ত্রে ব্যবহারের জন্য প্রায় ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের প্রয়োজন হয়।

পশ্চিমা বিশ্বের চাপের মুখেও ইরান বরাবরই বলে আসছে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। তারা চিকিৎসার মতো জরুরি খাতে ব্যবহারের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে।

ইরান এবং বিশ্বশক্তির মধ্যে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছিলেন বারাক ওবামা। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন এবং বেশ কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এর পর থেকে ইরানও চুক্তির ধারা থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে।

ট্রাম্পের পর জো বাইডেন ক্ষমতায় আসলে তিনি আবার চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চালান। তবে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার পরও এটি এখন পর্যন্ত সফলতার মুখ দেখতে পায়নি।