যুক্তরাষ্ট্র কি গৃহযুদ্ধের দিকে যাচ্ছে?
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বর্ণবাদের বিস্তার মার্কিন সমাজে বর্তমানে যে মাত্রায় বিভাজন সৃষ্টি করেছে সেটা ১৮৬১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধ শুরুর আগের সময়কার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সে দেশের একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকার চার্চ, স্কুলে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটছে বেশি
কৃষ্ণাঙ্গ অধিকারকর্মী ও আইনজীবী লাইফ ম্যালকম বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ ও বাদামী জনগোষ্ঠী কেবল যে সংখ্যাগরিষ্ঠ তা-ই নয়, দীর্ঘদিন ধরে অবদমিত এসব সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তিও দিনদিন বাড়ছে। পরিবর্তিত এ পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে ব্যর্থ শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীরা বর্ণবাদ ও জাতিগত বিদ্বেষপ্রসুত হয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একের পর এক বন্দুকবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে।
মার্কিন নৌবাহিনীর সাবেক এ কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে আফ্রিকান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা যে ধরনের সহিংসতা, চরিত্রহরণ ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন, ঠিক একই ধরনের বর্ণবাদের চর্চা হতো ঔপনিবেশিক আমলে।
ওয়াশিংটন ডিসিস্থ আমেরিকান ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের শিক্ষক ডোনাল্ড আর্ল কলিন্স মনে করেন, চলমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ২০৪০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কবলে পড়বে।
মঙ্গলবার আল-জাজিরায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে কলিন্স লিখেছেন, কৃষ্ণাঙ্গ, লাতিনো ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোর সম্ভাব্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি মোকাবেলায় পেটন গেনড্রন, ডিলান রুফ, প্যাট্রিক উড ক্রসিয়াস ও রবার্ট বোয়ার্সের মতো বন্দুকধারীরা বর্ণবাদ ও জাতিবিদ্বেষ-তাড়িত হয়ে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিষয়টি ২০৪০ সাল নাগাদ চূড়ান্ত রূপ নেবে।
তিনি লিখেছেন, রুফ, বোয়ার্স, ক্রসিয়াস, গেনড্রন ও তাদের মতো অনেকে তথাকথিত গ্রেট রিপ্লেসমেন্ট থিওরিতে এক ধরনের সম্মিলিত বিশ্বাস ধারণ করে। তারা গির্জায় প্রার্থনারত কৃষ্ণাঙ্গদের গণহারে হত্যা করেছে, মন্দিরে প্রার্থনারত ইহুদীদের নির্বিচারে গুলিতে মেরেছে, ওয়ালমার্টে কেনাকাটারত লাতিনোদের উপর বেপরোয়া গুলিবর্ষণ করেছে, এমনকি পুলিশি বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শ্বেতাঙ্গ বিক্ষোভকারীদের উপর এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করেছে।
কলিন্সের মতে, এসব জঘন্য হত্যাযজ্ঞ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং এসব সন্ত্রাসী কর্মর্কাণ্ডের মাধ্যমে এরা জানিয়ে দিচ্ছে যে শ্বেতাঙ্গ মানুষেরা যুক্তরাষ্ট্রের এ পরিবর্তনশীল চেহারার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মানুষের উপস্থিতি, প্রভাব-প্রতিপত্তিতে তারা ভাবছে শ্বেতাঙ্গ মানুষদের, পশ্চিমা সভ্যতার, আমেরিকান স্টাইলের অস্তিত্বই বুঝি বিপন্ন হতে চলেছে।
তিনি বলেন, অশ্বেতাঙ্গ সবকিছুর প্রতি এমন জিঘাংসা ও বিদ্বেষ মার্কিন সমাজের অনেক গভীরে বিভাজন ও সহিংসতার বীজ বুনে চলেছে। বর্তমানে যেসব হেইট স্পিচ, হেইট ক্রাইম ও গুলিবর্ষণের ঘটনা দেখা যাচ্ছে, সেগুলো কেবল বরফের চাঁই। কৃষ্ণাঙ্গ, অশ্বেতাঙ্গ, লাতিনো, এশীয়দের উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও হত্যার ঘটনাগুলো অন্যদের চোখে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। কিন্তু বর্ণবাদী শ্বেতাঙ্গদের কাছে এসব ঘটনা আত্মপ্রেমের প্রকাশমাত্র।
ডোনাল্ড কলিন্স আরও লিখেছেন, ব্যাপকবিস্তৃত বর্ণবাদ যুক্তরাষ্ট্রকে যে পরিস্থিতিতে নিয়ে গেছে, তাতে দেশটি আরেকবার গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। কারও কারও কাছে এমন চিন্তা সংশয়বাদী মনে হতে পারে কিন্তু এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে ১৮৬১ সালে যে ধরনের পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রকে গৃহযুদ্ধে টেনে নিয়েছিল, বর্তমানে আমরা তার অনেক কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।
সূত্র: প্রেস টিভি
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.