ইউক্রেনে সফল, বিশ্বজুড়ে চাহিদা বেড়েছে তুর্কি ড্রোনের

আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে সফল হওয়ার পর তুর্কি বায়রাক্টার টিবি-টু ড্রোনকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে রাশিয়ার আধুনিক সমরাস্ত্রের বিরুদ্ধে। সে পরীক্ষায় সফল হয়েছে তুর্কি ড্রোন। ইউক্রেনে রাশিয়ান আর্টিলারি সিস্টেম ও সাঁজোয়া যান ধ্বংস করার পর ড্রোনটির চাহিদা বেড়ে গেছে বিশ্বজুড়ে। খবর ডেইলি সাবাহ।

বায়রাক্টার টিবি-টু ড্রোন

বায়রাক্টার ড্রোন নির্মাতা সেলজুক বায়রাক্টার বলেন, ড্রোনগুলো দেখিয়েছে কীভাবে প্রযুক্তি আধুনিক যুদ্ধে বিপ্লব ঘটাচ্ছে। সেলজুক তার ভাই হালুকের সাথে মিলে ইস্তাম্বুলের ফার্ম বায়কার পরিচালনা করেন।

বাকুতে একটি প্রদর্শনীতে নতুন আকিনসি ড্রোনকে পাশে রেখে সেলজুক বায়রাক্টার বলেন, বায়রাক্টার টিবি-টুয়ের যা করার কথা ছিল তা করে দেখিয়েছে। ড্রোনগুলো উন্নত বিমান বিধ্বংসী সিস্টেম, উন্নত আর্টিলারি সিস্টেম ও সাঁজোয়া যান ধ্বংস করে দিচ্ছে। এগুলোর কার্যকারিতা দেখে পুরো বিশ্বে এর গ্রাহক বাড়ছে।

আকিনসি ড্রোনের গায়ে সই করছেন এরদোয়ান

১২ মিটার প্রশস্ত ডানার অধিকারী টিবি-টু ড্রোন লেজার-গাইডেড বোমা দিয়ে ট্যাংক ও আর্টিলারি ধ্বংসের আগে ২৫ হাজার ফুট পর্যন্ত ওপরে উঠতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধে এ ড্রোন রাশিয়ার অপ্রতিরোধ্য সামরিক শ্রেষ্ঠত্বকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। ইউক্রেনে ড্রোনটি এমনই খ্যাতি পেয়েছে যে, রুশ সেনাদের উপহাস করা জনপ্রিয় একটি দেশপ্রেমের গানে এ ড্রোনের উল্লেখ করা হয়েছে।

বায়রাক্টার ড্রোনটি কেবল ইউক্রেনের নয় বরং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনেরও মনোযোগ কাড়তে সক্ষম হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অন্তত ৪৫ বার ড্রোনটির নাম উল্লেখ করেছে।

বায়কার নামের প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৮০ সালে সেলজুক বায়রাক্টারের পিতা ওজদেমির বায়রাক্টারের হাত ধরে। ২০০৫ সাল থেকে এটি ড্রোন নির্মাণের দিকে মনোযোগ দেয়। তুরস্কের স্থানীয় প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ড্রোনের দিকে মনোনিবেশ করে তারা। বায়রাক্টার বলেন, তারা বছরে ২০০টি টিবি-টু ড্রোন উৎপাদন করতে পারেন।

টিবি-টু ড্রোনটি সাম্প্রতিক সময়ে সিরিয়া, ইরাক, লিবিয়া, কারাবাখ ও ইউক্রেনের সংঘাতের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্ধারক ফ্যাক্টরে পরিণত হয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক পরিসরে তুরস্কের প্রতিরক্ষা রপ্তানি এক ধাক্কায় অনেকখানি বেড়ে যায়। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, বিশ্ববাজারে টিবি-টু এবং নতুন আসা আকিনসি ড্রোনের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে।

দুই সপ্তাহ আগে রাশিয়া নতুন প্রজন্মের একটি লেজার অস্ত্রের কথা জানায়, যেগুলো ড্রোনকে ধ্বংস করতে পারে বলে তারা দাবি করেছিল। এ ব্যাপারে বায়রাক্টার বলেন, এ ধরনের অস্ত্র টিবি টুয়ের বিরুদ্ধে অকার্যকর।

বায়রাক্টার জানায়, তারা এখন টিবি-থ্রি নিয়ে কাজ করছেন, যেটির ভাঁজযোগ্য ডানা রয়েছে এবং এটি ছোট-রানওয়ে থেকেই টেক অফ বা অবতরণ করতে পারে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ বা আগামী বছরের শুরুতেই বাজারে আসবে। একই সাথে তারা এমইউআইএস নামের মনুষ্যবিহীন যুদ্ধ জেট বিমান তৈরিতে নজর দিয়েছে, যেটি প্রথম উড্ডয়ন করবে আগামী বছর।