নয়াদিল্লিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী, পর্যবেক্ষকদের উদ্বেগ

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ নয়াদিল্লি সফর করেছেন। এ ঘটনায় উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভারতীয় অধিকারকর্মী ও পর্যবেক্ষকরা। তাদের আশঙ্কা গ্যান্টজের সফর ভারতের সংখ্যালঘুদের ওপর খারাপ পরিণতি বয়ে আনতে পারে। দুদেশের সামরিক সম্পর্কের গভীরতা ফিলিস্তিনিদের পাশাপাশি ভারতের মুসলমানদের জন্যও হুমকি। মিডল ইস্ট আই।

নয়াদিল্লিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

বৃহস্পতিবার গ্যান্টজ নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সাথে দেখা করেন। বৈঠকে দুপক্ষের কর্মকর্তারা একটি বিশেষ নিরাপত্তা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন এবং দুই দেশের মধ্যে ৩০ বছরের নিরাপত্তা সম্পর্ক আরও জোরদারে নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি সহযোগিতা সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা করেন।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই মন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ এবং রাজনাথ সিং ইসরায়েল-ভারত সম্পর্কের ৩০ বছর সম্পর্কের ভিত্তিতে একটি যৌথ ঘোষণা দিয়েছেন এবং প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও গভীর করার জন্য প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত ও ইসরায়েল সীমান্ত নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইসহ একই ধরনের এবং অভিন্ন চ্যালেঞ্জ ভাগ করে নিতে রাজি আছে। একসাথে কাজ করার মাধ্যমে দুদেশ সক্ষমতা বাড়াতে পারে এবং উভয় দেশের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থ নিশ্চিত করতে পারে।

তবে ভারতীয় অধিকারকর্মীরা এই সফরকে নির্লজ্জ বলে বর্ণনা করেছেন। তারা সতর্ক করেছেন, দুই দেশের মধ্যে সামরিক ঘনিষ্ঠতাকে উপেক্ষা করা যাবে না। গ্যান্টজের সাথে সামরিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল এবং ইসরায়েলি অস্ত্রশিল্পের প্রতিনিধিরাও ছিলেন।

দক্ষিণ এশিয়া সলিডারিটি গ্রুপের কর্মী অমৃত উইলসন বলছেন, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর আগমন নিঃসন্দেহে ফিলিস্তিনিদের জন্য উদ্বেগজনক বার্তা রয়েছে। কারণ ইসরায়েল ভারতের সাথে যৌথভাবে সামরিক শক্তির বৃদ্ধি ঘটালে তা ফিলিস্তিনিদের ওপর আরও আগ্রাসনে সহায়তা করবে। একইসাথে ভারত কাম্মিরি মুসলমান এবং ভারতের দলিত ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য আরও বেশি হুমকি হয়ে উঠবে।

উইলসন মিডল ইস্ট আইকে বলেন, গ্যান্টজের সফরটি বিশেষভাবে ক্ষতিকর ছিল, কারণ পেগাসাস স্পাইওয়্যার প্রকাশিত হওয়ার পর অভিযোগের কোনো সমাধান হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, মোদি সরকার বিরোধী দলের নেতাসহ প্রায় ৩০০ ভারতীয়দের ফোন হ্যাক করার জন্য ইসরায়েলি কোম্পানি এনএসওর সফ্টওয়্যার ব্যবহার করেছে। পাশাপাশি অধিকারকর্মী ও সাংবাদিকরাও এই ন্যাক্কারজনক অপচেষ্টার শিকার হয়েছে।

২০১৭ সালে মোদি প্রথম ভারতীয় নেতা হিসেবে ইসরায়েল করেন এবং নয়া দিল্লি এখন দেশটির সবচেয়ে বড় অস্ত্র ক্রেতা। ভারত বার্ষিক প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কেনে ইসরায়েলের কাছ থেকে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিপ্রি) অনুসারে, ২০১৫-২০১৯ সালের মধ্যে ইসরায়েল থেকে ভারতে অস্ত্র সরবরাহ ১৭৫ শতাংশ বেড়েছে।