ইউক্রেনকে হাইমারস দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, বাড়ছে উত্তেজনা

ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের হাই-মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম (হাইমারস) সরবরাহকে ঘিরে উত্তেজনা বাড়ছে। দুদিন ধরে মার্কিন ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য ও রুশ কর্মকর্তাদের পাল্টা হুমকি উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা আরও বাড়াচ্ছে।

প্রাথমিকভাবে ইউক্রেনকে চারটি হাইমারস সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জঁ-পিয়েঘ বলেছেন, প্রাথমিকভাবে ইউক্রেনকে চারটি হাইমারস সরবরাহ করা হবে। ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ কেবলমাত্র প্রতিরক্ষার প্রয়োজনে নিজেদের ভূখণ্ডে সিস্টেমগুলো ব্যবহার করবে।

এদিকে পেন্টাগনের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, হাইমারস সিস্টেমের সাহায্যে কোথায় মিসাইল ছোঁড়া হবে সেটা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা নিজেরাই নির্ধারণ করবেন।

ইউক্রেনের প্রভাবশালী এমপি ইয়েগর শেরনিভ বৃহস্পতিবার রাতে ইউক্রেন টুয়েন্টিফোর টিভিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, হাইমারস কোথায় ব্যবহার করা যাবে সে বিষয়ে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে আমরা জানি। কিন্তু একটি রকেট ছোঁড়ার পর সেটা কোনদিকে যাবে তার নিশ্চয়তা কারও পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়।

ইয়েগর শেরনিভ আরও বলেন, রাশিয়ার সামরিক স্থাপনা এবং রাশিয়ার আকাশে সেদেশের জঙ্গীবিমান ইউক্রেনের বিধিসম্মত সামরিক লক্ষ্যবস্তু। আমরা সেখানে আঘাত হানার অধিকার রাখি।

হাইমারস সিস্টেমের সাহায্যে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ উসকানি সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ এনেছে রাশিয়া। নিয়মিত ব্রিফিংয়ে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রত্যাশিত মিসাইল সিস্টেম ইউক্রেনীয় বাহিনী সুমি অঞ্চলের শস্তকা এলাকায় মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে। ইউক্রেনীয় বাহিনীর বেতার বার্তায় আড়ি পেতে এ তথ্য জানা গেছে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, শস্তকা থেকে ওই মিসাইল ছুঁড়ে কুরস্ক ও ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে আঘাত হানলে রাশিয়া তৎক্ষণাৎ প্রত্যাঘাত করবে। ইউক্রেনীয়রা তখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের উপর হামলার অভিযোগ তুলবে।

রুশ কর্মকর্তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে যে হাইমার সিস্টেম পাঠাচ্ছে তার সাহায্যে গাইডেড ও আনগাইডেড উভয় ধরনের মিসাইল ছোঁড়া সম্ভব। আনগাইডেড মিসাইল ছুঁড়ে ৭০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা সম্ভব। সেক্ষেত্রে রাশিয়ার কুরস্ক ও ব্রায়ানস্ক ইউক্রেনীয় মিসাইলের আওতায় চলে আসবে। এছাড়া হাইমারসের সাহায্যে লকহিড মার্টিনের এমজিএম-১৪০ ও পিআরএসএমের মতো গাইডেড মিসাইলও ছোঁড়া সম্ভব। সেক্ষেত্রে মস্কো, স্মোলেনস্ক ও ভরোনেজ অঞ্চলের কিছু অংশও ইউক্রেনীয় মিসাইলের পাল্লায় চলে আসবে।

এদিকে রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য ও সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, রুশ ভূখণ্ডে আঘাত হানা হলে অবশ্যই আমরা শত্রুপক্ষের সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রগুলোতে হামলা চালাব। আমরা জানি এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্র কিয়েভে নয়, অন্য কোথাও অবস্থিত।