ইয়েমেন: যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও মরছে মানুষ!

আরব বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ ইয়েমেন। দেশটিতে বিগত ছয় বছর ধরে সংঘাত চলছে। হঠাৎ করে গত এপ্রিলের শুরুতে সংঘাতের ইতি টেনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করাটা ছিল এক অভাবনীয় অগ্রগতি। কিন্তু যুদ্ধবিরতির মধ্যেও মানুষের মৃত্যু থেমে নেই। পেতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে প্রতিনিয়ত মরছে ইয়েমেনিরা। টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ইয়েমেনে ধ্বংসযজ্ঞ

এদিকে, দেশটিতে দুই পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। এর প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার আরও দুই মাসের জন্য যুদ্ধবিরতি নবায়ন করেছে সৌদি আরব ও ইরান সমর্থিত হুথিরা।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র লিজ থ্রোসেল গতকাল শুক্রবার জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেছেন, এপ্রিলের শুরুতে প্রথমবার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে রেকর্ড করা বেশিরভাগ মৃত্যুর কারণ পেতে রাখা মাইন বিস্ফোরণ।

ইয়েমেনের পতাকা

তিনি বলেন, ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গত দুই মাসে ১৯ জন নিহত হয়েছেন। সংস্থাটি অস্ত্রচালিত ড্রোন হামলায় চার বেসামরিক নাগরিকের আহত হওয়ার ঘটনাও নথিভুক্ত করেছে। আহতদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন। ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এসব হামলা হয়েছে। দুই মাসের যুদ্ধবিরতির মধ্যে আহত হয়েছেন অন্তত ৩২ জন বেসামরিক লোক।

ইয়েমেনে যুদ্ধ শুরু হয় ২০১৪ সালে। এই যুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ হলো ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা এবং সৌদির নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী। ওই বছরই হুথিরা উত্তর ছিটমহল থেকে নেমে আসে এবং ইয়েমেনের রাজধানী সানা দখল করে নেয়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইয়েমেন সরকার প্রধান মনসুর হাদিকে সৌদি আরবে পালাতে বাধ্য করে। সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট হাদি সরকারের ক্ষমতা পুনরুদ্ধারে ২০১৫ সালের প্রথম দিকে যুদ্ধে প্রবেশ করে।

ইয়েমেনের যুদ্ধটি ছিল নৃশংস যুদ্ধগুলোর একটি। এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে। অনাহারে অর্ধাহারে প্রাণ দিয়েছে নারী-শিশুরা। নির্বিচারে নারী ও শিশু হত্যা চলেছে বছরের পর বছর। সৌদি সামরিক জোটের দাবি, ইরান হুথিদের মাধ্যমে ইয়েমেনে প্রক্সিযুদ্ধে লিপ্ত ছিল।