বাঁচার বিকল্প পথ, নেদারল্যান্ডসে অভিনব স্কাইওয়াক

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে শহর পানিতে তলিয়ে গেলে বিভিন্ন ভবনের ছাদের ওপর দিয়ে কিভাবে চলাচল করতে হবে, এখন থেকেই সে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ডাচরা। দিনকে দিন ফুঁসে উঠছে সমুদ্রের পানি। এভাবে বাড়তে থাকলে একসময় সমুদ্রে তলিয়ে যাবে পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ। তাই এখন থেকেই বাঁচার বিকল্প পথ ও পদ্ধতি আয়ত্ব করছে নেদারল্যান্ডসসের মানুষজন। খবর এএফপি, ফ্রান্স ২৪ নিউজ।

নেদারল্যান্ডসে অভিনব স্কাইওয়াক

নমুনা হিসেবে বন্দরনগরী রটারড্যামে তৈরি করা হয়েছে ভাসমান ব্রিজের মতো একটি স্কাইওয়াক। দেখানো হয়েছে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কিভাবে চাষাবাদ এবং বৃষ্টির পানি সঞ্চয়ের মাধ্যমে ইউরোপের বৃহত্তম বন্দরের অব্যবহৃত স্থানগুলোকে কাজে লাগানো যায়। পরীক্ষামূলক এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে রুফটফ ডেজ অ্যাসোসিয়েশন।

বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসিতপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম নেদারল্যান্ডস। রুফটপ ডেজ-এর পরিচালক লিওন ভ্যান গিস্ট বলেন, আমরা চাই লোকেরা বুঝুক, ছাদে থাকা কতটা চ্যালেঞ্জিং। সেই সঙ্গে ছাদ থেকে তারা দেখুক, শহরের ওপর কী পরিমাণ চাপ তৈরি হয়েছে। আমরা আমাদের শহরে থাকা সমতল ছাদের সম্পূর্ণ সম্ভাবনার মাত্র তিন শতাংশ ব্যবহার করছি।

উজ্জ্বল কমলা রঙের স্কাইওয়াকটি প্রায় ৬০০ মিটার (১,৯৬৯ ফুট) দীর্ঘ। ব্রিজটি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের একটি ডিপার্টমেন্ট স্টোরের সঙ্গে সেতুবন্ধন তৈরি করেছে। ব্রিজটি রাস্তার স্তর থেকে ২৯.৫ মিটার উঁচুতে। ২৪ জুন পর্যন্ত লোক চলাচলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে ব্রিজটি। এই পদযাত্রায় উইন্ড টারবাইন, সোলার প্যানেল, আর্ট গ্যালারি এবং একটি ড্রোন ল্যান্ডিং প্যাডও দেখতে পাবেন পথচারীরা।

নগর কর্তৃপক্ষ যদি ভবিষ্যতে একটি পূর্ণমাত্রার ছাদগ্রাম তৈরির অনুমোদন দেয়, তবে ফসল চাষের জন্য টেকসই উপকরণ ও ছোট ছোট ঘর দিয়ে সাজানো হবে এই প্রকল্প। শহরটিকে রূপান্তর করতে কয়েক দশক সময় লাগতে পারে বলে জানান ভ্যান গিস্ট। লিওন মনে করেন- এটা করা সম্ভব এবং তিনি শতভাগ বিশ্বাসী।

দেশটির জলবায়ু-অভিযোজিত ভবিষ্যতের জন্য সম্ভাব্য সফল কিছু ধারণা নিয়ে ছয় বছর ধরে কাজ করছে রুফটপ ডেজ। এর প্রতিষ্ঠাতা এমিল ভ্যান রিনসুম রটারড্যাম এনভায়রনমেন্ট সেন্টারের পরিচালক বলেন, এই ছাদে এরইমধ্যে আমরা ৬০ হাজার লিটার পনি সঞ্চয় করেছি। এই ছাদরাস্তায় উৎপাদিত পণ্যের কিছু অংশ স্থানীয় খাবারের দোকানগুলোতে সরবরাহ করা হয়। রেস্তোরাঁগুলোও জনপ্রিয়তা পেয়েছে।