জেলেনস্কি: দুর্ভিক্ষ এড়াতে রুশ উপনিবেশ ভাঙতে হবে

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, বিশ্ব এখন খাদ্য সংকটে আক্রান্ত। যতদিন রাশিয়ার এই উপনিবেশিক যুদ্ধ চলতে থাকবে ততদিন বৈশ্বিক খাদ্য সংকট দূর হবে না। খবর আনাদোলু।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি

গতকাল সোমবার ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে আফ্রিকান ইউনিয়নের ব্যুরো অব অ্যাসেম্বলিকে তিনি বলেন, চলমান এই যুদ্ধটি আপনার ও আপনার দেশগুলোর কাছে খুব দূরের বলে মনে হতে পারে। কিন্তু এর ফলস্বরূপ বিপর্যয়মূলকভাবে ক্রমবর্ধমান খাদ্যমূল্য ইতোমধ্যে লক্ষ লক্ষ আফ্রিকান পরিবারের পাশাপাশি এশিয়া, ইউরোপ, ল্যাটিন আমেরিকার অনেকের কাছে পৌঁছে গেছে। বিশেষ করে আফ্রিকা মহাদেশের কিছু দেশ এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হিমশিম খাচ্ছে।

ইউক্রেন বিশ্বের শীর্ষ গম সরবরাহকারীদের অন্যতম। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে রাশিয়া কর্তৃক হামলা চালানোর পর থেকে ইউক্রেনের বন্দরগুলো অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে গুদামে প্রচুর মজুদ থাকলেও গমসহ অন্যান্য শস্যের রপ্তানি স্থগিত হয়ে যায়। এর পুরোটার জন্যই রাশিয়াকে দায়ী করে থাকে পশ্চিমা বিশ্ব।

আফ্রিকান ইউনিয়নের সদর দপ্তর

তবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করে খাদ্য সংকটের দায় অস্বীকার করে রাশিয়া। মস্কোর দাবি, তাদের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞার কারণেই বিশ্বজুড়ে খাদ্যের এই ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে।

আফ্রিকান ইউনিয়ন মত প্রকাশ করেছে, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা, বিশেষ করে রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক অর্থপ্রদান ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়ার মতো বিষয়গুলো কিছু সদস্য দেশকে খাদ্য পণ্য কিনতে বাধা দিচ্ছে। তবে ইইউ বলছে, তারা রাশিয়ার ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেগুলো খাদ্য ও সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ জিনিসকে শামিল করেনি। ফলে কেউ যদি রাশিয়ান খাদ্য এবং সার কিনতে চায়, তাহলে তারা তা করতে পারে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, চলমান যুদ্ধই বিশ্বব্যাপী সঙ্কটের সূচনা বিন্দু। কোভিড -১৯ মহামারী চলাকালেও বিশ্বে কোনো খাদ্য ঘাটতি ছিল না। যদি এ যুদ্ধ না হতো, তাহলে কৃষক ও কৃষি কোম্পানিগুলো এ বছর রেকর্ড ফসল নিশ্চিত করতে পারত।

নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা দেশগুলোকে চাপ দিতে রাশিয়া জনগণের দুর্ভোগকে হাতিয়ার বানিয়েছে উল্লেখ করে জেলেনস্কি আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, তাদের কণ্ঠস্বর যেন আন্তর্জাতিক অঙ্গণে শোনা যায়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, এখন আমাদের এক নম্বর কাজ হল দুর্ভিক্ষের হুমকি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া। একবিংশ শতাব্দিতে এসে এই জাতীয় হুমকি বিদ্যমান থাকতে পারে না। তাই রাশিয়ার এই উপনিবেশিক যুদ্ধ বন্ধে সবাইকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।