মিয়ানমারের মুসলিম অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতা আর জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান। ঘরবাড়ি হারা সেইসব রোহিঙ্গা মুসলমানদের আশ্রয় দিতে ইচ্ছা পোষণ করেছে মালয়েশিয়া।
শনিবার মালয়েশিয়ার প্রভাবশালী উপ-স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী দাতুক নূর জ্যাজলান বলেছেন, মালয়েশিয়া রাখাইনের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে প্রস্তুত। তবে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যেন জঙ্গিগোষ্ঠী মালয়েশিয়ায় ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা অবলম্বন করবে মালয়েশিয়া।' এজন্য মালয়েশিয়ায় প্রবেশের আগে কঠোর পরীক্ষণ প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে শুক্রবার দেশটির কোস্টগার্ডের প্রধান জুলকিফলি আবু বকরের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স। তিনি বলেন, 'এতদিন আমরা রোহিঙ্গা নৌকাগুলোকে মালয়েশিয়ায় অনুপ্রবেশকালে জরুরি মানবিক সাহায্য দিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দিতাম। মানবিক দিক বিবেচনায় আগামীতে আর তাদেরকে ফেরত পাঠাবো না। তাদেরকে সাময়িক সময়ের জন্য আমরা মানবিক আশ্রয় দিতে প্রস্তুত।'
তবে মন্ত্রী পরিষদের দায়িত্বশীল কেউ এবারই প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা ইস্যুতে কিছু বললো। মন্ত্রী দাতুক নূর জ্যাজলান বলেন, 'মানবিক দিক বিবেচনা করেই মালয়েশিয়া শরণার্থীদের গ্রহণ করবে। সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদানের ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করবে।'
মন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, 'মিয়ানমারের মানবিক বিপর্যয় থেকে উগ্রপন্থী কোন জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থান ঘটতে পারে। আমরা কোনভাবেই চাই না, এমন জঙ্গিগোষ্ঠী মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করুক।' মালয়েশিয়ায় ইতোমধ্যেই জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের মাধ্যমে নিবন্ধিত ৫৬ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাস করছে বলে জানান তিনি।
এদিকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও রোহিঙ্গা সঙ্কটে নিরসনে বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। তিনি আশ্বস্ত করেছেন সামনের ১২ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে অালোচনা করবেন।