গাজা ইস্যুতে উত্তাল সুইডেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি

গাজায় ইসরায়েলের চলমান নৃশংসতার বিরুদ্ধে এবং ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের রাজপথে নেমেছে হাজারো মানুষ। শনিবার আয়োজিত এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা ইসরায়েলকে ‘খুনি’ আখ্যা দিয়ে স্লোগান দেন এবং অবিলম্বে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির দাবি জানান।

বিক্ষোভের ছবি

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিক্ষোভকারীরা রাজধানীর ওডেনপ্ল্যান চত্বরে সমবেত হয়ে সুইডিশ সংসদের দিকে পদযাত্রা করেন। তাদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা এবং মুখে ছিল ‘খুনি ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ছাড়ো’, ‘খুনি ইসরায়েল, গাজা ছাড়ো’ এবং ‘অবিলম্বে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি চাই’ এর মতো স্লোগান। তারা গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধের জোর দাবি জানান।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম্যাটিয়াস গারডেল ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের চালানো গণহত্যার বিষয়ে সুইডিশ সরকারের নীরবতার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি কট্টর-ডানপন্থী ইসরায়েলি সরকার কীভাবে ফিলিস্তিনিদের মৃত্যু শিবিরে, অর্থাৎ নির্যাতন শিবিরে ঠেলে দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আরও দেখছি, কীভাবে ফিলিস্তিনিদের জন্য পাঠানো জরুরি ও মানবিক সহায়তাকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে নিরীহ মানুষদের গুলি করে হত্যা করছে ইসরায়েল। আমরা চাই সুইডিশ সরকার আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নিক, যা একটি উদারনৈতিক গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য।’

অধ্যাপক গারডেল সুইডেনকে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করার দাবি জানান। একইসঙ্গে, গণহত্যা চালিয়ে যাওয়া ইসরায়েলি সংস্থাগুলোকে বর্জন এবং তাদের সঙ্গে সকল সহযোগিতা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। তিনি যোগ করেন, ‘আমরা এর মাধ্যমে সোচ্চার কণ্ঠে জানাচ্ছি যে, ফিলিস্তিনে গণহত্যার জন্য দায়ীদের অবশ্যই হেগ-এ বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মহলের যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গত অক্টোবর থেকে গাজায় এক রক্তক্ষয়ী অভিযান পরিচালনা করে আসছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, এই হামলায় এ পর্যন্ত ৫৬,৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

এর আগে, গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) ইসরায়েল একটি গণহত্যা মামলার সম্মুখীন।