প্রায় পাঁচ দশক পুরোনো গর্ভপাত সংক্রান্ত একটি আইন বাতিল করে দিয়েছে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। ফলে দেশটিতে গর্ভপাত আর সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে বহাল থাকছে না। এ রায়ের প্রতিক্রিয়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ১৫০ বছর পিছিয়ে গেল। খবর আর বনিউজ ও আনাদোলু।
আদালতের বাইরে গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষের কর্মীদের অবস্থান
গতকাল শুক্রবার রো বনাম ওয়েড মামলা বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট এ রায় দেন। ৬-৩ ভোটে ১৯৭৩ সালের মামলাটি বাতিল হয়ে যায়। ১৯৭৩ সালে আমেরিকার আদালতের দেওয়া একটি মামলার রায় গত ৫০ বছর ধরে গর্ভপাতের অধিকার রক্ষা করে আসছিল। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, এখন থেকে ১৯৭৩ সালের ওই রায়কে আর গ্রাহ্য করা হবে না। মার্কিন সংবিধান কখনোই নারীদের গর্ভপাতের অধিকার দেয়নি।
আদালতের এ রায়ের ফলে আমেরিকার যে কোনো স্টেট চাইলেই নারীদের গর্ভপাতের অধিকার থেকে বিরত রাখতে পারবে। এর ফলে দেশটিতে লক্ষ লক্ষ নারী ‘রাইট টু অ্যাবর্ট’ বা গর্ভপাতের আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। তবে একই সঙ্গে আদালত এও জানিয়েছে, চাইলে স্টেট প্রশাসন গর্ভপাতের অনুমতি দিতে পারবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
মার্কিন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রায়ের পর এক গুচ্ছ আইন প্রণয়ন শুরু করবে আমেরিকার ৫০টিরও বেশি স্টেট। যেখানে গর্ভপাতকে নিষিদ্ধ করা হবে। আর এমনটি হলে গর্ভপাত করানোর জন্য মার্কিন নারীদের এমন দেশে যেতে হবে যেখানে গর্ভপাত আইনত বৈধ।
এ বিষয়ে দেওয়া এক বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, গর্ভপাতের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের এ সিদ্ধান্ত দেশকে ১৫০ বছর পিছিয়ে নিয়েছে।
বাইডেন বলেন, আদালত গর্ভপাতকে অপরাধমূলক করার রাষ্ট্রীয় আইন তৈরি করেছে, যা আমাদের অষ্টাদশ শতাব্দীতে নিয়ে যায়। আদালত আক্ষরিক অর্থেই এ রায়ের মাধ্যমে আমেরিকাকে ১৫০ বছর পিছিয়ে নিয়ে গেছে।
নারীদের নিজেদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রয়েছে উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, আসুন আমরা এ বিষয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠি। তিনি ফেডারেল আইন হিসেবে গর্ভপাতের অধিকার পুনরুদ্ধার করার জন্য কংগ্রেসকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটিক পুরোপুরি বিপরীতমুখী অবস্থানে আছে। রিপাবলিকানরা গর্ভপাতের বিরুদ্ধে। মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ রক্ষণশীল বিচারপতিদের মধ্যে তিনজনই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত।
প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পে গর্ভপাতের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন এবং ভাষণও দিয়েছিলেন।