চীনের বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণায় নজর রাখতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে
- Details
- by ভিন্নমত
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের জন্য ২০২২ সাল গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। কারণ বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শীতকালীন অলিম্পিকের কূটনৈতিক বয়কট মোকাবেলা, কঠোর জিরো-কোভিড নীতি বাস্তবায়ন, ধীরগতির অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং তৃতীয় মেয়াদে চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে জিন পিংয়ের জন্য বছরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উচ্চাভিলাষী ওই লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নে জিন পিংয়ের নেতৃত্বাধীন চায়না কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) বেছে নিয়েছে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা কৌশল। সামাজিক বিভিন্ন মাধ্যমে লাখো ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে বিশ্ব মতামকে প্রভাবিত করার অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। আন্তর্জাতিক একাধিক সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সেই খবর উঠে এসেছে।
চীনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে অভিযোগ রয়েছে তা আড়াল করতে বিরাট নেটওয়ার্কের ছদ্মবেশে অনলাইন প্রচারণা চালাচ্ছে দেশটি। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের হাতে একটি নথি এসেছে। যেখানে চীনের এমন কর্মকাণ্ডের প্রমাণও পাওয়া গেছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের হাতে আসা নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে- ফেইক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে চীন তার সমালোচকদের লক্ষ্য করে পাল্টা যুক্তি দিচ্ছে, নিজেদের অনুকূলে যায় এমন তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে। এরপর অন্য ফেইক আইডি থেকে সেগুলোকে সমর্থন করা হচ্ছে। ফলে মানুষ তাদের প্রচারণায় বিভ্রান্ত হচ্ছে।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, গত বছরের ২১ মে চীনের সাংহাই পুলিশের একটি শাখা অনলাইনে এক নোটিশ পোস্ট করে। যেখানে বেসরকারি ঠিকাদারদের কাছ থেকে বিড চাওয়া হয় (জনমত গঠনে আকৃষ্ট করে এমন কাজ)৷ বিষয়টি চীনা কর্মকর্তাদের মধ্যে জনমত ব্যবস্থাপনা হিসেবে পরিচিত। উল্লেখ্য, দেশটিতে যেকোনো বিষয়ে জনমত গঠন ভুয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রচারণা চালানোর এই প্রতারণামূলক পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, চীনা কর্মকর্তারা তাদের এই মতামত ব্যবস্থাপনা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চাইছে।
সম্প্রতি অনলাইনে উইলসন এডওয়ার্ডস নামে একজন সুইস জীববিজ্ঞানীর মন্তব্য ছড়িয়ে দেওয়ার পর ফেসবুক ৫০০টি অ্যাকাউন্ট মুছে দিয়েছে। উইলসন লিখেছেন- যুক্তরাষ্ট্র করোনার উৎস অনুসন্ধানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কার্যক্রমে অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ করছে।
এদিকে, বেইজিংয়ে সুইস দূতাবাস বলেছে, উইলসন এডওয়ার্ডস নামে কোনো ব্যক্তির অস্তিত্বই নেই। নিউ ইয়র্ক টাইমস তাদের প্রতিবেদনে আরও জানিয়েছে, চীন এমন হাজারো ফেইক অ্যাকাউন্ট খুলে তাদের পক্ষে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। উদ্দেশ্য- দেশটিতে যে মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, তা আড়াল করা।
কর্তৃত্ববাদী চীন নিজ দেশের অভ্যন্তরে যে গণহত্যা ও ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, গণতান্ত্রিক বিশ্বের নেতৃত্বদানকারী যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তাদের প্রতিহত করতে আরও কৌশলী হওয়া। কারণ, বেইজিং নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে বিশ্বব্যাপী যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তার বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা না নিলে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করে বিশ্বব্যাপী কর্তৃত্ববাদের বীজ ছড়িয়ে দিতে পারে চীন৷ তাই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের এখনই মোক্ষম সময়।
লেখক: জিয়ানলি ইয়াং, নিক মোনাকো
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর