লাপিদ: ইরানের সাথে চুক্তি ইসরায়েলের শত্রুদের পুরস্কৃত করবে

ইরানের সাথে সম্ভাব্য পরমাণু চুক্তি বাতিল করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং পশ্চিমা শক্তির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ। তিনি বলেছেন, এ চুক্তি ইসরায়েলের শত্রুদের পুরস্কৃত করবে। জেরুজালেমে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন। খবর আরব নিউজ।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ

গতকাল বুধবার সংবাদ সম্মেলনে সম্ভাব্য চুক্তিটিকে একটি ‘খারাপ চুক্তি’ বলে অভিহিত করেন লাপিদ। সেই সাথে অভিযোগ করেছেন, বাইডেন এর আগে ইরানের বিরুদ্ধে যেসব বিষয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেসব রেড লাইনকে সম্মান করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

তিনি সরাসরি অভিযোগে বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো একটি রেড লাইন আঁকে, ইরানিরা তা উপেক্ষা করে এবং এরপর রেড লাইনটি সরে যায়। এর আগে বাইডেন ইরানকে পারমাণবিক রাষ্ট্র হতে বাধা দেওয়ার যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সেগুলোকে সমর্থন করছে না।

ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়ে বৈঠক

জো বাইডেন ২০১৫ সালের চুক্তিটিকে আবারও কার্যকর করতে আগ্রহী। তেহরানের সাথে ছয় জাতির ওই চুক্তির মাধ্যমে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞার বিনিময়ে অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল। তবে ওবামার স্বাক্ষরিত ওই চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন।

দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চললেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান শেষ পর্যন্ত নতুন কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে সক্ষম হবে কি-না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বাইডেন প্রশাসন ইরানের সর্বশেষ অফারটি বিবেচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ইসরায়েল এ চুক্তি বানচাল করার জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেওয়া হলে তারা বিপুল পরিমাণ অর্থ লেবাননের হিজবুল্লাহর মতো জঙ্গি সংগঠনগুলোকে দেবে, যা তেল আবিবের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

এর আগে ইরানের সাথে আলোচনার জন্য নির্দিষ্ট কোনো পক্ষকে দোষারোপ করা থেকে বিরত ছিলেন লাপিদ। কিন্তু বুধবার তিনি সরাসরি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও আলোচনাকারী অন্য শক্তিগুলো শেষ মুহূর্তে ইরানের দাবি মেনে নিচ্ছে। তিনি বলেন, ইরানিরা আবারও দাবি করছে, আর আলোচকরাও আবার ছাড় দিতে প্রস্তুত। কিন্তু আমরা মাথার ওপর একটি চরমপন্থী পরমাণু হুমকি নিয়ে বাঁচতে রাজি নই। আমরা এই চুক্তি হতে দেব না।

আগামী ১ নভেম্বর নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ইয়ার লাপিদ। নির্বাচনে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হবেন। নেতানিয়াহু ও লাপিদের মধ্যে নীতিগত অনেক পার্থক্য থাকলেও ইরান প্রশ্নে তারা কার্যত অভিন্ন অবস্থান ধরে রেখেছেন।