কঠোর লকডাউনে চীনের সাড়ে ছয় কোটি মানুষ

এক সপ্তাহ পরেই শুরু হেমন্ত উৎসব। চীনা নববর্ষের পর এটাই সে দেশে সবচেয়ে বড় ছুটির মৌসুম। তার আগে সাড়ে ছয় কোটি নাগরিককে কঠোর লকডাউনের আওতায় আনল চীন সরকার। হেমন্ত উৎসবের মৌসুমে দেশের ভেতরে ভ্রমণ না করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে চীনা নাগরিকদের। কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়া রোধে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খবর এপি।

কঠোর লকডাউন ও বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনের আশঙ্কায় চীনা নাগরিকদের কাজকর্ম ও সামাজিক মেলামেশা ব্যাহত হচ্ছে

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় চেংদু শহরে দুই কোটি ১০ লাখ মানুষকে নিজ নিজ অ্যাপার্টমেন্ট ও রেডিডেনসিয়াল কমপ্লেক্সের ভেতরে লক করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে অ্যাপার্টমেন্টের অধিবাসীরা যাতে পরস্পরের বাড়িতে জমায়েত না হন, সেটা নিশ্চিত করতে বহুতল ভবনগুলোর সামনে দিয়ে ক্ষণে ক্ষণে উড়ে যাচ্ছে ড্রোন। ভিডিও ক্যামেরায় অ্যাপার্টমেন্টের অধিবাসীদের কর্মকাণ্ডের দৃশ্যধারণের পাশাপাশি ড্রোনের লাউডস্পিকার থেকে প্রয়োজনীয় সতর্কবার্তাও দেওয়া হচ্ছে।

পূর্বাঞ্চলীয় বন্দরনগরী তিয়ানজিনে নতুন করে ১৪ জন কোভিড-আক্রান্ত শনাক্ত হবার পর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস-পরীক্ষা অনলাইনে স্থানান্তর করা হয়েছে। চেংদু শহরে স্কুল খোলার মৌসুম পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ব সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মোট ৩৩টি শহরে অধিবাসীদের যার যার অ্যাপার্টমেন্ট ও রেসিডেনসিয়াল কম্পাউন্ডে লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে।

চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন জানিয়েছে, সোমবার সারাদেশে মোট ১ হাজার ৫৫২ জন নতুন কোভিড-আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। ১৪০ কোটি মানুষের দেশে সংক্রমণের এ সংখ্যা শুনতে কম মনে হলেও সরকারের ‘জিরো-কোভিড’ নীতি প্রতিপালন নিশ্চিত করতে কঠোর লকডাউন ও কোয়ারেন্টিনের বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে।

১০-১২ সেপ্টেম্বর চীনে হেমন্ত উৎবের সরকারি ছুটি। বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ ছুৃটির মৌসুমকে সামনে রেখে এমন কঠোর লকডাউন এরইমধ্যে চীনের ভ্রমণ ও পর্যটন ব্যবসার পাশাপাশি সার্বিক অর্থনীতি ও সমাজে চাপ সৃষ্টি করেছে। কঠোর লকডাউন ও বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনের আশঙ্কায় চীনা নাগরিকদের কাজকর্ম ও সামাজিক মেলামেশা ব্যাহত হচ্ছে। কিন্তু কোভিড সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে কঠোর পদক্ষেপের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি।

২০১৯ সালের শেষে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় উহানে সর্বপ্রথম কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। তখন থেকে দফায় দফায় অতি কঠোর লকডাউন প্রবর্তন করেছে চীন সরকার। লকডাউন নিশ্চিত করতে উহানসহ কয়েকটি শহরে বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের প্রবেশপথ রীতিমতো ঢালাই ও সিলগালা করার ঘটনাও ঘটেছে।