যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্দি বিনিময় করল আফগানিস্তান

প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্দি বিনিময় করল আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক দশকের বন্দিদশা শেষে আজ সোমবার সকালে কাবুলে পৌঁছেছেন তালেবানের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সদস্য হাজী বাশার নুরজাই। বিনিময়ে তালেবানরা তাদের হাতে ২২ বছর ধরে বন্দি মার্কিন প্রকৌশলী মার্ক ফ্রেরিকসকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করেছে।

মার্কিন প্রকৌশলী মার্ক ফ্রেরিকস

আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমীর খান মুত্তাকী সাংবাদিকদের বলেছেন, মার্কিন পুরকৌশলী মার্ক ফ্রেরিকস আজ ছাড়া পেয়েছেন। তাকে কাবুল বিমানবন্দরে মার্কিন কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একইসময়ে সেখানে হাজী বাশারকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দীর্ঘদিন আলোচনা শেষে এ বন্দি বিনিময় সম্পন্ন হয়েছে। একটি মার্কিন প্রতিনিধিদল মার্ক ফ্রেরিকসকে বুঝে নিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, মার্কিন নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য মার্ক ফ্রেরিকস আফগানিস্তানে বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পে প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছিলেন। ২০০০ সালে তাকে অপহরণ করা হয়।

হাজী বাশার

আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ আজ সকালে এএফপিকে বলেছেন, তালেবান সংগঠনে হাজী বাশারের কোনো আনুষ্ঠানিক পদ ছিল না। তবে তিনি এ সংগঠনকে অস্ত্র ও অন্যান্য জোরালো সমর্থন জুগিয়েছেন। আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমীর খান মুত্তাকী, গোয়েন্দা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান আব্দুল হক ওয়াসিক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিদায়াতুল্লাহ বদরী কাবুল বিমানবন্দরে হাজী বাশারকে স্বাগত জানিয়েছেন।

তবে রুশ বার্তা সংস্থা স্পুৎনিক জানিয়েছে, আফগানিস্তানে মার্কিন দখল শুরু হলে মোল্লা ওমরের অনুপস্থিতিতে হাজী বাশার কান্দাহার প্রদেশ শাসন করছিলেন। ২০০১ সালে সিআইএর সঙ্গে সমঝোতার পর তিনি মার্কিন এজেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং তালেবানদের বিমান বিধ্বংসী ম্যানপ্যাডসসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করেন।

২০০৫ সালে মার্কিন সরকার বাশার নুরজাইয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ৫ কোটি ডলার মূল্যের হেরোইন পাচারের চেষ্টার অভিযোগ আনে। সিআইএর পক্ষ থেকে নিরাপত্তার আশ্বাস পেয়ে বাশার নুরজাই হেরোইন পাচার মামলার শুনানিতে অংশ নিতে নিউইয়র্ক যান। সেখানে মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং পরবর্তীতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।