ইরানে বিক্ষোভ থামছেই না, নিহত বেড়ে ৭৬

ইরানে পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৭৬ জন নিহত হয়েছে। সরকারের এমন কঠোরহস্ত ও দমনপীড়ন সত্ত্বেও থামছে না বিক্ষোভ। রাজধানী তেহরানসহ দেশটির ৮০ টির বেশি শহরে গত ১১ দিন ধরে অব্যাহত রয়েছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। খবর বিবিসি।

মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে গ্রিসে প্রবাসী ইরানিদের বিক্ষোভ

মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জানায়, ইরানে চলমান বিক্ষোভ-সহিংসতায় এ পর্যন্ত বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ ৭৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটি জানায়, মাহসার মৃত্যুর পর শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ রুপ নিয়েছে সহিংসতায়। ওই বিক্ষোভ এখন সরকার বিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়েছে। তবে ইরান সরকার বিক্ষোভ দমনে চরম কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দেশটির পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর তাজা গুলি চালাচ্ছে।

 মানবাধিকার সংস্থাটি জানিয়েছে, সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়ায় বিক্ষোভকারীদের  হতাহতের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তবে প্রতিদিনই নিহতের সংখ্যা বাড়ছে।

যদিও সরকারি সূত্র বলছে, বিক্ষোভ-সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ৪১। এদের মধ্যে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যও বেশ কয়েকজন। বিক্ষোভ থেকে কয়েকশত মানুষকে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে অন্তত ২০ জন সাংবাদিক রয়েছেন।

আইএইচআরের পরিচালক মাহমুদ আমিরি মোগাদ্দাম বলেন, বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা ভয়াবহ এবং চিকিৎসা সেবাও তারা পাচ্ছে না। বিক্ষোভে নির্বিচারে তাজা গুলি ব্যবহার আন্তর্জাতিক অপরাধের শামিল। বিশ্বের উচিত ইরানি জনগণের মৌলিক চাওয়ার প্রতি সমর্থন জানানো।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানে বেড়াতে গিয়ে নৈতিক পুলিশের হাতে আটক হন ২২ বছরের কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনি। পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় তিনদিনের মাথায় শুক্রবার তার মৃত্যু হয়। খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী তেহরানসহ দেশের বিভিন্ন শহরে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, পুলিশের নির্যাতনে মাহসার মৃত্যু হয়েছে।

তবে ইরানি কর্মকর্তারা বলেছেন, ওই তরুণী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এরইমধ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গিয়ে ভাষণে ঘটনার তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি।