আট মাসে দ্বিতীয় সেনা অভ্যুত্থান

আট মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় সেনা অভ্যুত্থান দেখল বুরকিনা ফাসো। দেশটির সামরিক শাসক পল হেনরি দামিবাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ঘোষণা দিয়েছেন সেনা ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ট্রাওর। একই সাথে সরকার ভেঙে দেওয়া, সংবিধান স্থগিত করা, দেশব্যাপী কারফিউ জারি এবং সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অভ্যুত্থানকারীরা। খবর আল-জাজিরা।

পল হেনরি দামিবাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ঘোষণা দিচ্ছেন ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ট্রাওর

শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে ট্রাওর বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা বাধ্য হয়ে দামিবাকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ক্রমবর্ধমান সশস্ত্র বিদ্রোহ মোকাবেলায় অক্ষম হয়ে পড়েছিল হেনরি দামিবার সরকার।

এক বিবৃতিতে ট্রাওর আরও বলেন, দেশের ক্রমাগত অবনতিশীল পরিস্থিতির বিষয়ে আমরা দামিবাকে বেশ কয়েকবার দৃষ্টি ফেরাতে চেয়েছি। কিন্তু তার কার্যকলাপে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, যে সব লক্ষ্য নিয়ে আমরা কয়েক মাস আগে কাজ শুরু করেছিলাম, তা থেকে দামিবা দূরে সরে যাচ্ছেন। তাই আমরা তাকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দ্রুত একটি নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সনদ গ্রহণ এবং একজন নতুন প্রেসিডেন্ট নির্ধারণ করার জন্য জাতীয় অংশীদারদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।

গত জানুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোচ কাবোরকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতায় এসেছিলেন হেনরি দামিবা। এর আট মাসের ব্যবধানে সেনাদের অভ্যুত্থানে তিনি নিজেই আবার ক্ষমতাচ্যুত হলেন।

দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত চলে আসা বুরকিনা ফাসোর প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এ অবস্থায় দেশটির জনগণের মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত হতাশা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। অথচ জানুয়ারিতে অভুত্থানের সময় সামরিক নেতারা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে মোকাবেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি পরিস্থিতির কোনো উন্নতি ঘটাতে পারেননি।

এদিকে আগের সামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার সাথে সাথে সাথে সব ধরনের সব রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের কার্যক্রমও স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে সীমান্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত।

তবে শুক্রবারের অভ্যুত্থানের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইকোওয়াস)। এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দেশটিতে যখন সাংবিধানিক শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য কাজ চলছিল, ঠিক সে সময়েই এ অভ্যুত্থান সংঘটিত হলো। বুরকিনা ফাসোর বর্তমান অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘও।