জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের আশ্বাস বলসোনারোর

ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হলে ইসরায়েলে ব্রাজিলের দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ৩০ অক্টোবর, রোববার ব্রাজিলের নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ চলছে।

জাইর বলসোনারো

২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে বামপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা স্বল্প ভোটের ব্যবধানে বলসোনারোকে পরাজিত করেছিলেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ায়।

সাও পাওলোর গেটুলিও ভার্গাস ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক সালেম নাসের বলেছেন, বলসোনারো তার খ্রিস্টান ইভানজেলিকান সমর্থকদের খুশি করার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে তার বিতর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্বিবেচনা করতে পারেন। ২০১৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই, বলসোনারো তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক কৌশল অনুসরণ করেছিলেন। তিনি ইসরায়েলে ব্রাজিলের দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। 

সেসময় তার এই পরিকল্পনাটি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিরোধিতার মুখে পড়েছিল। এটি ব্রাজিলের পররাষ্ট্র নীতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত ছিল। ঐতিহ্যগতভাবেই ব্রাজিল ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাতে সবসময় টু স্টেট সলিউশন বা দুই-রাষ্ট্রনীতির পক্ষে থেকেছে।

নাসের জানান, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমে রাজধানী সরিয়ে আনার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। কিন্ত ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হতে ব্যর্থ হলে সেই আন্দোলন হ্রাস পেতে শুরু করে। কিন্ত বলসোনারো দ্বিতীয় দফার ভোটে জয়ী হলে ইভানজেলিকানদের গুরুত্ব বেড়ে যাবে। তারা জেরুজালেমে দূতাবাস সরিয়ে আনার জন্য তার উপর চাপ প্রয়োগ করবে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অধ্যাপক ব্রুনো বেকলিনি বলেছেন, ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যদি ট্রাম্প জয়লাভ করেন তাহলে দূতাবাসের স্থানান্তরের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।

এদিকে ২৮ অক্টোবর, শুক্রবার ট্রাম্প বামপন্থী লুলাকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'লুলা একজন উগ্র বাম পাগল, এরা দ্রুত আপনার দেশকে ধ্বংস করবে।'

নাসেরের মতে, লুলা নির্বাচিত হলে তিনি সম্ভবত ফিলিস্তিনপন্থী বেশ কিছু নীতি গ্রহণ করবেন। প্রসঙ্গত, লুলা ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।  

সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর