কর্মক্ষেত্রে ১০ ভাগের বেশি নারী পুলিশ যৌন হয়রানির শিকার

বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত নারী কনস্টেবলদের ১০ ভাগেরও বেশি সদস্য কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার হন বলে একটি গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছে কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভ (সিএইচআরআই)। তবে এই তথ্য ভিত্তিহীন বলে অস্বীকার করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।

মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও সিএইচআরআই-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘সমতার কঠিন পথে বাংলাদেশের নারী পুলিশ’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।

সিএইচআরআইয়ের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত নারী কনস্টেবলদের ১০ ভাগেরও বেশি সদস্য কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার হন। এই হয়রানি কেবল কনস্টেবলদের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং উপপরিদর্শক ও সহকারী উপপরিদর্শক হিসেবে কর্মরত নারী কর্মকর্তাদের প্রায় তিন ভাগ এবং ক্যাডার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত নারী পুলিশ সদস্যরাও যৌন হয়রানির মুখোমুখি হন।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। তিনি এই তথ্যকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, এই ধরনের কোনো প্রমাণ কেউ কখনো দিতে পারবে না। কর্মক্ষেত্রে কোনো নারী পুলিশের যৌন হয়রানির শিকারের কোনো নজির নেই।

গবেষণা প্রতিবেদনে নারী পুলিশদের বেশকিছু সুবিধা-অসুবিধার কথাও তুলে ধরা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত নারী পুলিশের সংখ্যা ১১ হাজার ৩৮ জন, যা পুলিশের মোট জনবলের ৫ দশমিক ৮৪ ভাগ বলে জানায় সিএইচআরআই।

কাজের জন্য পুলিশ বিভাগকে একটি ভালো জায়গা বলে মানেন এখানে কর্মরত নারীরা। তারা মনে করেন, পুলিশের একটি পোশাক তাদেরকে পুরুষের সমান ক্ষমতা প্রদান করে এবং তারা পুরুষ সহকর্মীদের মতোই সমানভাবে জনগণকে সেবা দিতে পারেন। এছাড়া তাদের পরিবারও তাদেরকে সমানভাবে সমর্থন দিয়ে থাকে।

এই কাজে সমস্যা হিসেবে বলা হয়, পুলিশের জ্যেষ্ঠ পদে নারীদের প্রতিনিধিত্ব একেবারেই কম। পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক পদে ক্যাডার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত মাত্র একজন নারী কর্মকর্তা রয়েছেন। কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব নারী কর্মকরতাদের দেওয়া হয় না। মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন ব্যবহারিক কাজ থেকেও তাদের দূরে রাখা হয়।

এছাড়া নারী পুলিশ কখনো যৌন হয়রানির শিকার হলে এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ দায়ের হয় না। এর কারন হিসেবে বলা হয়, নারী পুলিশ সদস্যদের সমস্যা সম্পর্কে পুরুষ পুলিশ কর্কর্তারা সচেতন নন।

বৈঠকে সিএইচআরআইয়ের পরিচালক মায়া দারুওয়ালা বলেন, নারী পুলিশদের সমস্যা দূরীকরণে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ জেন্ডার নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা উচিত। এ ব্যাপারে পুলিশ বিভাগকে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়া তিনি ভালো পুলিশি সেবার জন্য পুলিশ বিভাগে নারীদের সমান প্রতিনিধিত্ব রাখার পক্ষে মত দেন।

উক্ত বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের নারীবিষয়ক আঞ্চলিক প্রতিনিধি ক্রিস্টিন হান্টার, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, বাংলাদেশ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক ও বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন্স নেটওয়ার্কের (বিপিডব্লিউএন) সভাপতি মিলি বিশ্বাস, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির প্রধান আইনজীবী সালমা আলী, ‘বাঁচতে শেখা’র নির্বাহী পরিচালক অ্যাঞ্জেলা গোমেজ প্রমুখ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

মোশাররফ করিমের জন্য ভারতীয় ভক্তের কান্না

মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরাও করবে ইসলামী আন্দোলন

সাখাওয়াত: লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি

আজ রাতে ব্যাহত হতে পারে ইন্টারনেট সেবা

রিজভীকে সাত দিনের মধ্যে পাসপোর্ট দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ