কাতার বিশ্বকাপে ভক্তদের নামাজ আদায়ের সুযোগ
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি দেশে দিনে পাঁচবার আযানের মাধ্যমে নামাজ আদায়ের আহ্বান জানান মুয়াজ্জিনেরা। এরমধ্যে শুক্রবারের জুমা আযানের আলাদা বিশেষত্ব আছে। যথারীতি কাতারেও একই ধারা অব্যাহত আছে। বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় এই বিষয়টিকে আলাদা গুরুত্ব দিয়েছে আয়োজক কাতার। গত শুক্রবারেই যা দেখা গেল।
মুসলিম বিশ্বের প্রথম বিশ্বকাপে ভক্তদের জুমার নামাজ আদায়ের সুযোগ
প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্য এবং মুসলিম কোনো দেশে বসেছে ফিফা বিশ্বকাপ। সেখানে উপস্থিত থাকা ফুটবল ভক্ত এবং ফিফার মুসলিম কর্মকর্তাদের জুমা নামাজ পড়ার বিশেষ সুযোগ তৈরি করে দেয় কাতার প্রশাসন। দোহার আল থুমামা স্টেডিয়ামের বাইরে নামাজ পড়ার জন্য একটি স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন তারা।
এই ভেন্যুতে মুখোমুখি হয়েছিল স্বাগতিক কাতার ও সেনেগাল। দুটি দলই মুসলিম বিশ্বের প্রতিনিধি। খুব স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচের আগে দুই দেশের সমর্থকরাও ওই জুমার নামাজে অংশ নেন। এ ধরনের ঘটনা বিশ্বকাপের ইতিহাসে বিরল।
মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি দেশে দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে আযানের মাধ্যমে নামাজ আদায়ের আহ্বান জানান মুয়াজ্জিন। এরমধ্যে শুক্রবারের জুমা আ
মুসলিম ফুটবল ভক্তরা বলেছেন, কাতারের বিশ্বকাপে তারা অন্য ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। প্রতিটি স্টেডিয়ামে নামাজ পড়ার স্থান আছে। এছাড়া কম দামে হালাল খাবার খাওয়ার সুযোগ এবং স্টেডিয়ামে অ্যালকোহল নিষেধাজ্ঞা তাদের জন্য স্বস্তিদায়ক ছিল।
মরক্কোর একজন ফুটবল ভক্ত ইউসুফ আল ইদবারি রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি একটি ইসলামিক দেশে এসেছি যেখানে আমি জুমার নামাজেও যোগ দিতে পারছি। এবারের টুর্নামেন্টে এটিই আমাকে বেশি আনন্দিত করেছে।'
এছাড়া রাতের বেলা দর্শকদের জন্য যেসব ফ্যান ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হচ্ছে সেখানেও নামাজের জন্য বিরতি ঘোষণা করা হচ্ছে। এটিও মুসলিমদের জন্য আনন্দদায়ক একটি অভিজ্ঞতা। এর আগের কোনো বিশ্বকাপে এ ধরনের অভিজ্ঞতা পাওয়ার কোনো সুযোগই ছিল না বলে জানিয়েছেন অনেক দর্শক।
বিশ্বকাপ উপলক্ষে আগত বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের সামনে নিজের দেশের মুসলিম ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে কাতার। রাজধানী দোহার রাস্তায় স্থাপন করা ম্যুরালে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর হাদিস আরবি ও ইংরেজি ভাষায় লেখা হয়েছে। ২০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও কোরানের আয়াত তেলাওয়াত করা হয়েছে।
এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত কাতারের মিডিয়া অ্যাটাশে আলী আল আনসারি নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, ৪৫০ মিলিয়ন আরবদের জন্য এটি এমন কিছু যা তারা ভেবেছিল তাদের জীবদ্দশায় কখনও দেখতে পাবে না।
কাতারে চলমান বিশ্বকাপ নিয়ে পশ্চিমা মিডিয়ায় যতই নেতিবাচক খবর প্রচার করা হোক না কেন, আরবসহ মুসলিম বিশ্বের মুসলমানরা কিন্তু এই বিশ্বকাপ নিয়ে অনেক উচ্ছ্বসিত। এই টুর্নামেন্টটি তাদের জন্য এমন একটি অভিজ্ঞতা যা তারা আজীবন মনে রাখবে।
দক্ষিণ আফ্রিকান ফুটবল অনুরাগী রিদওয়ান গুলাম হুসেন রয়টার্সকে জানান, ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে নামাজ পড়ার জন্য তাকে প্রায় সময় মাঠের বাইরে যেতে হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘সে সময় খেলার অনেক কিছুই মিস করেছিলাম আমি। কিন্তু এই বিশ্বকাপটা মনে হচ্ছে যেন আমার নিজের বিশ্বকাপ। এটা আমার জন্য মানানসই। এ ধরনের বিশ্বকাপ এবারই প্রথম।'
সূত্র: রয়টার্স
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর