ফ্রান্সে তীব্র হচ্ছে ওষুধের ঘাটতি

ওষুধ ঘাটতির সমস্যায় ভুগছে ইউরোপীয় দেশ ফ্রান্স। বিশেষ করে শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের সমস্যায় পড়েছে দেশটি। পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা। খবর আনাদোলু এজেন্সি।

ফার্মেসিগুলো অনেক রোগীকে ফিরিয়ে দিচ্ছে

খবরে বলা হয়, একযোগে করোনাভাইরাস, ফ্লু ও ব্রঙ্কাইটিসের সংক্রমণ চলছে ফ্রান্সে। এর ফলে দেশটিতে ওষুধের চাহিদা অনেক বেড়েছে। কিন্তু দেশটিতে ওষুধ সরবরাহকারী দেশ চীন নিজেদের চাহিদা মেটাতে রপ্তানি কমিয়ে দেওয়ায় ফ্রান্স এ ঘাটতি সমস্যায় ভুগছে। চলমান শীতকালেই ওষুধের ঘাটতি আরও বাড়তে পারে।

প্যারিসীয় অঞ্চল ইভলিনের একজন ফার্মাসিস্ট সোহিল চেরাবেন বলেন, গত কয়েক মাস ধরেই ওষুধের ঘাটতি শুরু হয়েছে। ফলে রোগীরা ফার্মেসিতে প্যারাসিটামল ও অ্যামোক্সিসিলিন জাতীয় ওষুধগুলো পাচ্ছে না। তিনি জানান, এখনও চূড়ান্ত পর্যায়ের ঘাটতি হয়নি। তবে আমরা এখন খুবই অল্প পরিমাণে ওষুধ পাচ্ছি। ফলে রোগীরা বিশেষ করে শিশুরা তাদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক পাচ্ছে না।

ফ্রান্স অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের সংকটে পড়েছে

চেরাবেন বলেন, প্রথম দিকে অ্যামোক্সিসিলিন সিরাপের ঘাটতি শুরু হয়েছিল। ফার্মেসিগুলো তখন এর পরিবর্তে অ্যামোক্সিসিলিন ট্যাবলেট প্রেসক্রাইব করতে শুরু করে। এখন সিরাপ বা ট্যাবলেট কোনোটিই নেই। সবই শেষ হয়ে গেছে। এমনিভাবে বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতায় চিকিৎসকরদের বিকল্প অ্যান্টিবায়োটিক দিতে বলা হয়েছিল। এখন সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকই ঘাটতির মুখে পড়েছে।

ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত ১৪ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক এবং প্যারাসিটামলের ঘাটতি আরও কয়েক সপ্তাহ অব্যাহত থাকবে এবং এ ব্যাপারে সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানানো হয়। ফ্রান্সের ওষুধ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভাগ জানায়, ২০২২ সালে দেশটিতে প্রায় তিন হাজার জাতের ওষুধ সরবরাহে ঘাটতি ছিল।

তবে ওষুধের ঘাটতিতে কেবল ফ্রান্স একাই নয়, ইউরোপীয় দেশ জার্মানি ও যুক্তরাজ্যও একই ধরনের সমস্যার মুখে পড়েছে। জানা গেছে, বিশ্বের ওষুধ সরবরাহে অন্যতম শীর্ষ দেশ তার উৎপাদন বাড়ালেও নিজেদের প্রয়োজন পূর্ণ করতে ওষুধ রপ্তানি হ্রাস করার এবং আমদানি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চীনের এই সিদ্ধান্ত ফ্রান্সসহ ইউরোপের পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে।

ফ্রান্সের ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের মেডিকেল এস্টাব্লিশমেন্ট কমিশনের সভাপতিদের সম্মেলনের সভাপতি রেমি সলোমন টুইটারে লেখেন, চীনে বর্তমান কোভিড তরঙ্গ ওষুধ খাতের এ সমস্যা আরও জটিল করে তুলবে। এ অবস্থায় তারা ফ্রান্সেই ওষুধ উৎপাদনের আহ্বান জানান। তবে সেক্ষেত্রে ওষুধের কাচামালের জন্যও আবার বিভিন্ন দেশের মুখাপেক্ষী হতে হবে। ফলে সহসাই ফ্রান্সের এ সমস্যা কাটছে না।