বাবা-ভাইকে ‘ফিরে’ পেতে চাইলেন প্রিন্স হ্যারি

বাবা রাজা তৃতীয় চার্লস ও বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়ামকে ‘ফিরে’ পেতে চেয়েছেন ব্রিটিশ যুবরাজ প্রিন্স হ্যারি। ব্রিটিশ টিভি চ্যানেল আইটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, রাজপরিবারের সঙ্গে তার সম্পর্ক এমন বিরূপ হওয়ার কথা ছিল না। খবর বিবিসির।

প্রিন্স হ্যারি

মার্কিন অভিনেত্রী মেগান মার্কেলকে বিয়ে করার পর থেকেই ব্রিটিশ রাজপরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ চলছে হ্যারির। সেই সঙ্গে রাজপরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন রয়েছে। সম্প্রতি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর সম্পর্কের দূরত্ব আরও বেড়েছে।

২০১৬ সালে মেগান মার্কেলের সঙ্গে পরিচয়ের দুই বছর পর ২০১৮ সালে হ্যারি মেগানের বিয়ে হয়। বিয়ে রাজকীয়ভাবে হলেও কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ায় মেগানকে ভালোভাবে নেয়নি রাজপরিবার। ফলে ২০২০ সালের মার্চে রাজপরিবার ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ জীবনযাপনের সিদ্ধান্ত নেন তারা।

সে সময় হ্যারি জানান, গণমাধ্যমের মাধ্যমে অপমান অপদস্ত হওয়া থেকে বাঁচতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি রাজপরিবারের বিরুদ্ধে আবারও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি। নেটফ্লিক্সের নতুন প্রামাণ্যচিত্র ‘হ্যারি অ্যান্ড মেগান’-এ রাজপরিবারের বিরুদ্ধে তিনটি মারাত্মক অভিযোগ করেন হ্যারি।

তার অভিযোগ, অন্যদের যেভাবে পরিবার আগলে রাখে, সংবাদমাধ্যম থেকে সুরক্ষা দেয়, মেগানের ক্ষেত্রে তা হয়নি। এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। তাতেও কোনও লাভ হয়নি। তার দাবি, এটির পিছনে বর্ণবৈষম্যের মতো কারণ থাকতে পারে।

পাশাপাশি বাবা রাজা তৃতীয় চার্লসের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছেন হ্যারি। বলেছেন, ছোট থেকেই ঠিকমতো বাবার সঙ্গ পাননি তিনি। বাড়িতে তার যতটা সময় কেটেছে, তার চেয়ে বেশি সময় কেটেছে বতসোয়ানায়। ফলে আফ্রিকার প্রতি তার একটা ভালোবাসা তৈরি হয়েছে। আর তাতেই পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে তার।

রাজপরিবারের পুরুষ সদস্যদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ এনে তিনি বলেছেন, তারা অনেক সময়ই নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে শুধুমাত্র পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে বিয়ে করেন। এমন কাউকে স্ত্রী হিসাবে বেছে নেন, যাদের সঙ্গে কোনো মনের মিলই নেই। অনেকেই মনে করছেন, এক্ষেত্রে তার আক্রমণের লক্ষ্য বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়ামও।

সোমবারের সাক্ষাৎকারে সেই একই কথার প্রতিধ্বনি করেছেন হ্যারি। বলেছেন, ‘তারা (রাজপরিবার) কখনও সম্পর্ক জোড়া লাগানোর আগ্রহ দেখায়নি। তবে আমি আসলে আমার বাবাকে ফেরত চাই, আমি আমার ভাইকে ফেরত চাই।’ যুক্তরাষ্ট্রের সিবিএস নিউজকে দেয়া পৃথক এক সাক্ষাৎকারে হ্যারি বলেন, বাকিংহাম প্যালেস তাকে ও তার স্ত্রী মেগানকে প্রকাশ্যে সহযোগিতা করার বিষয় প্রত্যাখ্যান করেছিল।

সাংবাদিক অ্যান্ডারসন কুপারকে হ্যারি বলেন, ‘গত ছয় বছর ধরে আমাদের বলা হচ্ছে, তোমার সুরক্ষা দিতে আমরা কোনো অবস্থান নিতে পারি না। কিন্তু পরিবারের অন্য সদস্যদের বেলায় ঠিকই এমনটি করা হচ্ছে।’ সাক্ষাৎকার দুটি আগামী ৮ জানুয়ারি সম্প্রচার করা হবে। এর দুদিন পরই হ্যারি’র আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘স্পেয়ার’ প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে।