দেবে যাচ্ছে হিমালয়-শহর জোশীমঠ

ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে হিমালয়-শহর জোশীমঠ দেবে যাচ্ছে মাটিতে। বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) রাত থেকে এলাকার সাড়ে পাঁচশো বাড়িঘর এবং অনেক রাস্তায় বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। খবর বিবিসি।

জোশীমঠ শহরের রাস্তাগুলোতে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল

বিজ্ঞানীরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ ভূমিধসের কারণে জোশীমঠ শহর ধীরে ধীরে মাটিতে বসে যাচ্ছে। শুক্রবার ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে রাজ্য প্রশাসন।

উত্তরাখণ্ড রাজ্যের চামোলি জেলায় অবস্থিত জোশীমঠ হিমালয়ে পাদদেশে অবস্থিত। হিমালয়ের কয়েকটি পর্বতে আরোহন করতে হয় জোশীমঠের পথ ধরেই। সেই জোশীমঠেই বাড়িঘর মাটিতে দেবে যাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে হঠাৎ করেই বাড়িঘরের মেঝে ও রাস্তায় ফাটল ধরতে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এলাকার অন্তত ৫৬১টি বাড়িতে ফাটল ধরা পড়ে।

আজ শুক্রবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। বৈঠকে পরে ক্ষতিগ্রস্ত শহরবাসীর জন্য বড় আশ্রয় শিবির খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এরইমধ্যে পরিবারগুলোকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪৭টি পরিবারকে জোশীমঠের বাসভবন থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি জোশীমঠ এলাকায় সব ধরনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয়েছে। যেসব হোটেলে ফাটল তৈরি হয়েছে, সেগুলোতে পর্যটকদের থাকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

জোশীমঠের সুনিল গ্রামের বাসিন্দা সুনাইনা সাকলানির বাড়ি গিয়ে দেখা যায়,  বাড়ির দেয়ালে, মেঝেতে বড় বড় ফাটল তৈরি হয়েছে।  সাকলানি বলেন, গত অক্টোবরে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই মেঝেতে চিড় ধরেছিল। তার থেকেই ধীরে ধীরে ফাটল তৈরি হয়। বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই ফাটলগুলো বড় আকার ধারণ করে।

জোশীমঠের রভিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা ভূতাত্ত্বিক স্বপ্নমিতা ভৈদেশ্বরণ জানান, দু’বছর ধরে জমির পরিমাপ নিয়ে তিনি দেখেছেন রভিগ্রাম এলাকাটি প্রতিবছর ৮৫ মিলিমিটার করে মাটিতে বসে যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, জোশীমঠের মতো হিমালয়ের নাজুক এলাকায় অপরিকল্পিত বাড়িঘরসহ নির্মাণকাজের চাপ আর পাহাড় নিতে পারছে না।