উত্তর কোরিয়ায় পরমাণু হামলার কথা বলেছিলেন ট্রাম্প!

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়ায় পারমাণবিক হামলার বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। সেই সঙ্গে কমিউনিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে এ হামলার জন্য অন্য দেশের ওপর দোষ চাপাতে পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। 'ডোনাল্ড ট্রাম্প বনাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র' নিয়ে লেখা নতুন বিভাগে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং উন

নিউইয়র্ক টাইমস ওয়াশিংটনের সংবাদদাতা মাইকেল শ্মিডের একটি বইয়ের নতুন আফটারওয়ার্ডে প্রথমবারের মতো এমন রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। সেই সময় যখন যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়, তখন হোয়াইট হাউসের চিফ অফ স্টাফ জন কেলি উদ্বেগ জানিয়েছিলেন।

গেল মঙ্গলবার নতুন বইয়ের পেপারব্যাক প্রকাশের আগে এনবিসি নিউজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেলি বইটির নতুন বিভাগে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ট্রাম্পের চিফ অফ স্টাফ হিসাবে কাজ করার সময় নানা বিষয় উল্লেখ করেন।

কেলি চিফ অফ স্টাফ হিসাবে হোয়াইট হাউসে প্রবেশের আট দিন পর ট্রাম্প সতর্ক করেছিলেন যে উত্তর কোরিয়া 'আগুন এবং ক্রোধ এবং অকপটে শক্তির মুখোমুখি হবে, যা এই বিশ্ব আগে কখনও দেখেনি।'

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে যখন ট্রাম্প জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তৃতা দেন। তখন তিনি কিমকে 'রকেট ম্যান' বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া কিমের সামরিক হুমকি অব্যাহত থাকলে 'উত্তর কোরিয়াকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেবেন' বলে হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

সেই মাসের শেষে ট্রাম্প তার টুইটের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়াকে তুচ্ছ করতে থাকেন। তবে ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে কী বলছেন তা নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন ছিলেন কেলি। শ্মিড তার রিপোর্টে এমনটা বলেছেন।

'টুইটের চেয়েও কেলিকে যেটা ভয় পাইয়েছিল তা হলো, ওভাল অফিসে বন্ধ দরজার আড়ালে ট্রাম্প এমনভাবে কথা বলতে থাকলেন যেন তিনি যুদ্ধে যেতে চান।'

ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ধারণা নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে আলোচনা করেছিলেন। আর বলেছিলেন যে যদি তিনি এমন একটি পদক্ষেপ নেন, তাহলে প্রশাসন অন্য কাউকে দায়ী করে নিজেকে দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। বইটির নতুন বিভাগে এসব বলা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধ কীভাবে শুরু হতে পারে, সেইসাথে এই ধরনের সংঘর্ষের বিশাল পরিণতি সম্পর্কে ট্রাম্পকে অবহিত করার জন্য সামরিক বাহিনীর শীর্ষ নেতাদের হোয়াইট হাউসে ডাকেন কেলি। কিন্তু কতজনকে হত্যা করা যেতে পারে সেই যুক্তি 'ট্রাম্পের ওপর কোন প্রভাব ফেলেনি,' শ্মিড তার বইয়ে লিখেছেন।

এরপর ইঙ্গিত করার চেষ্টা করেছিলেন যে অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া হবে, কিন্তু যুক্তিটি পরের কথা অনুসারে, ট্রাম্পের মনোযোগ এতদিন ধরে রেখেছিল কেলি।

তারপরও ট্রাম্প 'যুদ্ধের সম্ভাবনার দিকে ফিরে যাবেন, এক পর্যায়ে কেলির কাছে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে একটি পূর্বনির্ধারিত সামরিক আক্রমণ শুরু করার সম্ভাবনা উত্থাপন করা হয়েছিল।'

কেলি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, একটি প্রাক-অনুমোদিত ধর্মঘটের জন্য কংগ্রেসের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে, যা ট্রাম্পকে 'বিভ্রান্ত ও বিরক্ত' করেছিল।