দেশীয় কোম্পানিকেই কয়লা খনির কাজ দিলো আফগানিস্তান

আফগানিস্তান সরকার সে দেশের বালখাব কয়লা ক্ষেত্র থেকে কয়লা উত্তোলনের জন্য স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিকে কার্যাদেশ দিয়েছে। কোম্পানির একটি সূত্র এ কথা জানিয়েছে। খবর তোলো নিউজ। 

স্থানীয় একটি কোম্পানিকে কয়লা উত্তোলনের কার্যাদেশ দিয়েছে আফগানিস্তান

ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির উত্তরাঞ্চলীয় অপারেশনস প্রধান ফরিদ আজিম জানান, খনি ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় বালখাব কয়লা ক্ষেত্রে থেকে কয়লা উত্তোলনের জন্য চলতি সপ্তাহে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির অনুকূলে কার্যাদেশ ইস্যু করেছে। আমরা এরইমধ্যে সেখানে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছি।

তিনি বলেন, বালখাব অঞ্চলে কয়লা আহরণের ক্ষেত্রে আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বঞ্চনার অবসান ও গোশ-তিপেহ খান খনন প্রকল্পে অর্থায়ন। প্রাথমিকভাবে আমরা দুই হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করব। খনি থেকে উপার্জিত অর্থের পুরোটাই সরকারি প্রকল্প অর্থায়নে ব্যয় হবে। দেশের সম্পদের পুরো সুফল যাতে দেশের কাজে লাগে, সেজন্য বালখাবে দেশীয় কোম্পানিকে কাজ দেওয়া হয়েছে।

আফগানিস্তানের সার-এ-পুল ও বলখ প্রদেশের অন্তর্গত বালখাব অঞ্চলে কয়লা ছাড়াও বিপুল পরিমাণ তামা ও অন্যান্য খনিজের সন্ধান পাওয়া গেছে। ইরান, পাকিস্তান, চীন, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ আফগানিস্তানের খনি খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কয়েকটি বিদেশি কোম্পানি এরইমধ্যে সেখানে সক্রিয় রয়েছে। তবে প্রাদেশিক সরকার ও প্রভাবশালীরা স্থানীয় সম্পদে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ও মুনাফার ভাগ দাবি করায় অনেক সময় খনিজ সম্পদ আহরণের চুক্তি সম্পাদনে সরকারকে বেগ পেতে হয়।

সম্প্রতি বলখ প্রদেশ সফরকালে আফগান উপ-প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে খনি খাতে নিযুক্ত স্থানীয় ও বিদেশি ঠিকাদারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশেনা দেন। এ সময় তিনি কয়লা ও অন্যান্য খনিজ সম্পদ আহরণে আদর্শ প্রক্রিয়া অনুসরণে জোরারোপ করেন।

আফগানিস্তানের চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড মাইনস দেশের খনিজ সম্পদ আহরণের পরিমাণ বৃদ্ধির সুবিধার্থে কয়লা খনি খাতে অনুসৃত মডেলকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

চেম্বারের ডেপুটি শাকিল আহমাদ পায়মান বলেন, খনিজ আহরণ ক্ষমতা এমনভাবে বৃদ্ধি করা উচিত যাতে আমরা এসব সম্পদ রপ্তানি করে আফগানিস্তানের নাগরিকদের আয় বৃদ্ধি করতে পারি। শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত কয়লার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা।

ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির তথ্য মতে, গোল ভারজ, গুয়াখ ও শুরাবেক উপত্যকায় অবস্থিত বালখাবের দুটি কয়লাক্ষেত্রে মজুতের পরিমাণ আনুমানিক দেড়শ কোটি টন।

আফগানিস্তানে আবিষ্কৃত ৮০টি কয়লা খনির মধ্যে এতদিন কেবল ১৭টি খনি থেকে কয়লা উত্তোলন হতো। বিপুল পরিমাণ কয়লা, জ্বালানি ও অন্যান্য খনিজ সম্পদ থাকলেও আহরণ না হওয়ায় সাধারণ নাগরিকরা এসব সম্পদের সুফল পাচ্ছেন না।

খামা প্রেস এজেন্সি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, স্থানীয় বাজারে কয়লা ও জ্বালানি কাঠের দাম কয়েক গুন বৃদ্ধি পাওয়ায় আফগান নাগরিকরা তীব্র শীতে ঘর উষ্ণ রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। কয়লা ও কাঠের দোকানিরা বলছেন, দাম অত্যধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতা কমে গেছে।