তুর্কি শিক্ষার্থীর সঙ্গে সুইডিশ অধ্যাপকের ‘অভাবনীয় কাণ্ড’

এক অভাবনীয় কাণ্ড ঘটিয়েছেন সুইডেনের স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তিনি আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে তুরস্কের এক শিক্ষার্থীর সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন। ওই শিক্ষক হলেন অধ্যাপক পার কালব্রিং। বৈষম্যের শিকার শিক্ষার্থীর নাম ফাতমা জোহরা। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ফাতমা জোহরা এবং অধ্যাপক পার কালব্রিং

ওই অধ্যাপক তুর্কি শিক্ষার্থী ফাতমাকে ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামে যোগ দিতে বাধা দিয়েছেন। অধ্যাপকের দাবি, তিনি ফাতমাকে প্রোগামে রাখতে পারবেন না, কারণ তুরস্ক ন্যাটোতে সুইডেনের প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।

পার কার্লব্রিং ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিকাল সাইকোলজি রিসার্চ গ্রুপের নেতৃত্ব দেন। ফাতমা জেহরা ইস্তাম্বুলের ইবনে হালদুন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত তৃতীয় বর্ষের স্নাতক। তিনি স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩ সালের গ্রীষ্মকালীন ইন্টার্নশিপের ওই প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার সুযোগ পান। এজন্য তিনি আবেদন করেছিলেন।

ফাতমা জোহরার ইমেইলের জবাব দিয়েছেন অধ্যাপক পার কালব্রিং

ওই অধ্যাপক তুর্কি শিক্ষার্থী ফাতমাকে ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামে যোগ দিতে বাধা দিয়েছেন। অধ্যাপকের দাবি, তিনি ফাতমাকে প্রোগামে রাখতে পারবেন না, কারণ তুরস্ক ন্যাটোতে সুইডেনের প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।

গত ২৩ নভেম্বর ফাতমা একটি ইমেলে অধ্যাপক কার্লব্রিং-এর নেতৃত্বে গবেষণা প্রকল্পে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। কয়েক ঘণ্টা পর কার্লব্রিং উত্তর দেন, ‘আমি আপনাকে হোস্ট করতে চাই। কিন্তু যেহেতু তুরস্ক সুইডেনকে ন্যাটোতে যোগদানের অনুমতি দেয় না, তাই আপনাকে প্রত্যাখ্যান করতে হচ্ছে। দুঃখিত!’

ফাতমা টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে বলেন, এই উত্তর পাওয়ার পর আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। স্বাভাবিক হতে আমাকে সময় নিতে হয়েছে।

ফিনল্যান্ড ও সুইডেন আনুষ্ঠানিকভাবে গত মে মাসে ন্যাটোতে যোগদানের জন্য আবেদন করে। কয়েক দশক পর দেশ দুটি সামরিক জোটে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করে। মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নর্ডিক দেশ দুটিকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে।

অপরদিকে তুরস্ক ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ন্যাটোর সদস্য। দেশটি ন্যাটোতে সুইডেনের সদস্য পদের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। কারণ তুরস্ক মনে করে, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড সন্ত্রাসবাদ লালন করছে। বিশেষ করে কুর্দি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পিকেকের সদস্যদের প্রশ্রয় দিচ্ছে দেশ দুটি।

স্টকহোম ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ফ্রেডরিক জনসন টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে বলেন, অনেক শিক্ষার্থী আমাদের সাথে গবেষণা কার্যক্রমে যুক্ত হতে চায়। তবে সবাইকে সুযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না। তবে অপেশাদার পদ্ধতিতে সাড়া না দেওয়া ভালো ফল বয়ে আনবে না। অধ্যাপক কার্লব্রিং টিআরটি ওয়ার্ল্ডের কাছে এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি।