বৈঠক হচ্ছে জার্মানিতে, রাশিয়ার সতর্কবার্তা

যুদ্ধে ব্যালেন্স আনার যৌক্তিকতা দেখিয়ে ইউক্রেনকে ভারী অস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে ন্যাটো। রাশিয়া বিষয়টিকে বিপজ্জনক উল্লেখ করে বলেছে, ন্যাটো যদি ইউক্রেনে যুদ্ধ ট্যাংক ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার মতো ভারী অস্ত্র মোতায়েন করে তাহলে রাশিয়া যুদ্ধের একটি নতুন মাত্রা শুরু করবে। খবর আলজাজিরা।

ইউক্রেনকে ট্যাংকের মতো ভারি অস্ত্র দিতে চায় ন্যাটো

ইউক্রেনকে সামরিকভাবে সমর্থন, বিশেষ করে শক্তিশালী সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর বিষয়ে আলোচনার জন্য আজ শুক্রবার জার্মানিতে বসছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। এতে প্রায় ৫০টি দেশের প্রতিনিধিরা যোগ দিচ্ছেন, ন্যাটো সদস্যওরা উপস্থিত থাকবে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রাশিয়ার ওই সতর্কবার্তা প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক একটি বিষয় হতে যাচ্ছে। ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্তের অর্থ হলো, সংঘাতকে সম্পূর্ণ নতুন স্তরে নিয়ে আসা, যা বৈশ্বিক ও প্যান-ইউরোপীয় নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে মোটেই ভালো কিছু হবে না।

ন্যাটো ও রাশিয়া

রাশিয়ার হামলার পর থেকেই ইউক্রেন বিভিন্ন দেশ থেকে সামরিক সাহায্য চেয়ে আসছে। অনেক দেশ তাতে সাড়া দিলেও ভারী অস্ত্র সরবরাহে রাজি হয়নি। বিশেষ করে জার্মানি কিয়েভকে ট্যাংক সরবরাহ করার জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের সম্মুখীন হয়েছে। জার্মানি যুক্তি দিয়েছিল, ট্যাংকের মতো ভারী অস্ত্র দিলে তাতে লড়াইয়ের পক্ষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ক্রেমলিনও অব্যাহতভাবে চাপ দিয়ে আসছিল ইউক্রেনকে ভারী অস্ত্র সরবরাহ না করতে।

প্রথম দিকে ইউক্রেনের মিত্র দেশগুলো হালকা অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করলেও ধীরে ধীরে অনেক দেশ ভারী অস্ত্র সহায়তার দিকে পা বাড়িয়েছে। একই সাথে চাপ বেড়েছে জার্মানির ওপর। আজ সেই জার্মানিতেই বৈঠক হচ্ছে ইউক্রেনকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার ইস্যুতে।

বৈঠকের আয়োজক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা প্রধান লয়েড অস্টিন সমন্বয় বৈঠক পরিচালনা করবেন। তিনি বলেন, আমরা ইউক্রেনের আত্মরক্ষাকে সমর্থন করার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিশ্রুতি পুনরায় নবায়ন করব। তবে তিনি কী ধরনের সমর্থন দেবেন বা কোন ধরনের অস্ত্র দেবেন, সে ব্যাপারে কিছু বলেননি।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে মস্কোর রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনোভ বলেছিলেন, ইউক্রেন রাশিয়া বা ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে লক্ষ্যবস্তু করতে পশ্চিমা সরবরাহকৃত অস্ত্র ব্যবহার করলে রাশিয়া এর প্রতিশোধ নেবে। এটা সবার কাছে সুস্পষ্ট থাকা উচিত, জেলেনস্কি সরকারকে আমেরিকা বা ন্যাটো- যারাই অস্ত্র সরবরাহ করুক না কেন, আমরা তা ধ্বংস করব।

রাশিয়াকে পরাজিত করা অসম্ভব উল্লেখ করে আন্তোনভ বলেছিলেন, ইউক্রেনের বিষয়ে মার্কিন বাগাড়ম্বর যুদ্ধকে আরও বেশি জটিল করে তুলছে।

ইউরোপে ন্যাটো বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চীফ মার্কিন জেনারেল ক্রিস্টোফার ক্যাভোলি গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ন্যাটো সামরিক কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, পশ্চিমা যুদ্ধ ট্যাংক সরবরাহের কারণে ইউক্রেনে যুদ্ধের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিল।

অন্যদিকে ন্যাটো সামরিক কমিটির চেয়ারম্যান রব বাউয়ার ইউক্রেনকে ট্যাংক সরবরাহের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন, রুশ বাহিনী ট্যাংক নিয়ে যুদ্ধ করছে, তাই ইউক্রেনীয়দেরও ট্যাংক দরকার। নিজেদের এলাকা উদ্ধারের জন্যই তাদের এগুলো দরকার।

ট্যাংকের প্রাপ্যতাকেই সঠিকভাবে যুদ্ধ শেষ করার চাবিকাঠি উল্লেখ করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক বলেছেন, এখনই সময় পুতিনের লাফালাফি বন্ধ করা এবং চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়ার।