পুতিনের বেঁচে থাকা নিয়ে সন্দিহান জেলেনস্কি

ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ভ্লাদিমির পুতিন এখনও বেঁচে আছেন কি না সে ব্যাপারে তিনি সন্দিহান। গতকাল বৃহস্পতিবার দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে অনলাইন বক্তৃতা দেওয়ার সময় জেলেনস্কি এ কথা বলেন। খবর আনাদোলু।

ডাভোসে বক্তৃতা দিচ্ছেন জেলেনস্কি

জেলেনস্কি বলেন, পুতিন বেঁচে আছেন কি না, তা আমি পুরোপুরি বুঝতে পারছি না। চলমান যুদ্ধে কি তিনিই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, নাকি অন্য কেউ বা অন্য কোনো গোষ্ঠী সে ব্যাপারেও আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। আমরা কার সাথে কাজ করছি, তাও বুঝতে পারছি না। নইলে ইউরোপীয় নেতাদেরকে একটি ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরদিনই কিভাবে অন্য একটি দেশে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করা যায়।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া যুদ্ধের অবসান ঘটাতে রাশিয়ার সাথে সম্ভাব্য আলোচনার ব্যাপারে তিনি বলেন, রাশিয়ায় তিনি কার সঙ্গে আলোচনা করবেন এবং কী বিষয়ে আলোচনা করবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। আমার মনে হয়, এক্ষেত্রে আগে রাশিয়াকেই কাউকে খুঁজে বের করতে হবে। তারপর তাদের সাথে এ বিষয়ে আলোচনায় বসা যাবে।

জেলেনস্কি ও পুতিন

এর আগে বেশ কয়েকবার রাশিয়ার পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইউক্রেন রাশিয়ার সাথে আলোচনায় বসতে চায়নি।

রাশিয়ান পার্লামেন্ট ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, খেরসন, লুহানস্ক ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চলকে সংযুক্ত করার চুক্তি অনুমোদন করার পর গত অক্টোবরে রাশিয়া আবারও জেলেনস্কিকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানায়। সে সময় কিয়েভের পক্ষ থেকে আগে এ চার অঞ্চল ছেড়ে দেওয়ার পূর্বশর্ত দেওয়া হয়। রাশিয়া কোনো পূর্বশর্ত মেনে আলোচনায় বসতে রাজি হয়নি। ফলে যুদ্ধের ১১ মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধের কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না।

এদিকে ডাভোসে দেওয়া বক্তৃতায় মিত্র দেশগুলো থেকে সামরিক সহায়তার দাবি জানিয়ে জেলেনস্কি বলেন, শত্রু ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আক্রমণ থেকে বেসামরিক অবকাঠামো ও শক্তি অবকাঠামো রক্ষা করার জন্য বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ইউক্রেনে সামরিক সহায়তার বিধানে কারও দ্বিধা থাকা উচিত নয়।

একই সাথে তিনি বলেন, কিয়েভের এমন অস্ত্র পাওয়া উচিত যা আরও বেশি দূরত্বে কাজ করতে পারে এবং ইউক্রেনের বাহিনীকে সামনের দিকে আরও অগ্রসর হওয়ার সুযোগ করে দেয়।

এদিকে জেলেনস্কির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, জেলেনস্কির বক্তব্য না বোঝার কিছু নেই। কারণ রাশিয়া বা পুতিন না থাকলে কিয়েভের জন্য সব দিক দিয়েই সুবিধা হয়। তবে ইউক্রেনের সরকার যত তাড়াতাড়ি উপলব্ধি করবে এবং স্বীকার করবে যে রাশিয়া ও পুতিন উভয়ই আছে, থাকবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাশিয়াবিরোধী সবকিছু ছেড়ে দেবে, ততই তাদের জন্য মঙ্গল।

পেসকভ এ সময় রাশিয়ার দেওয়া প্রস্তাবগুলো মেনে নিতে কিয়েভের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে শীঘ্রই এ লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটে।