রুশ সম্পদ ইউক্রেনকে হস্তান্তর করবে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র সরকার সে দেশে জব্দকৃত রুশ সম্পদের একটি অংশ প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তরের ঘোষণা দিয়েছে। মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড ওয়াশিংটনে ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেল আন্দ্রেই কস্তিনের সঙ্গে বৈঠকের পর এ সংক্রান্ত ঘোষণা দেন। খবর সিএনএন।

মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড ও ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেল আন্দ্রেই কস্তিন

মেরিক গারল্যান্ড বলেন, আজকে ঘোষণা করছি যে জব্দকৃত রুশ সম্পদ ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তরে আমি প্রথমবারের মতো অনুমোদন দিয়েছি। তিনি জানান, গত এপ্রিলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অমান্যের জন্য রুশ ধনকুবের কনস্তান্তিন মালোফিয়েভ দোষী সাব্যস্ত হলে তার যে সম্পদ জব্দ করা হয়েছিল, সেটাই ইউক্রেনকে হস্তান্তর করা হবে। ওই অর্থ ইউক্রেনের জনগণের পক্ষে ব্যয় হবে।

ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেল কস্তিন মার্কিন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, রুশ ধনকুবেরদের অবৈধ সম্পদ জব্দের বিষয়টি কার্যকর করতে নতুন এই সিদ্ধান্তে আনন্দিত বোধ করছি। এতে করে রাশিয়ার ৫৪ লাখ ডলার সম্পদ ইউক্রেনের কাছে আসবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে নিজের বৈঠকের ছবি টুইটারে পোস্ট করে কস্তিন লিখেছেন, ইউক্রেনের সব নাগরিক কোনো না কোনোভাবে এই যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের জনগণ যাতে ক্ষতিপূরণ পায় তা নিশ্চিত করা আমাদের কর্তব্য।

রাশিয়ার মিডিয়া টাইকুন মালেফিয়ভকে ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তহবিলের অন্যতম উৎস ভাবা হয়ে থাকে। গত বছর এপ্রিলে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় মালোফিয়েভের অধীনস্থ ৪০ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করে। তালিকাভুক্তরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়াতে কাজ করে বলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ।

সে সময় মেরিক গারল্যান্ড এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মালোফিয়েভ তার সহযোগীদের মাধ্যমে ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের মালিকানা গ্রহণের ষড়যন্ত্র করেছিল।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার রুশ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ওপর কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও সমমনা দেশগুলোর আরোপিত মোট নিষেধাজ্ঞার সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে বলে রুশ প্রচারমাধ্যমের খবরে জানা যায়।

জব্দকৃত রুশ সম্পদ ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তরের জন্য গত বছরের মাঝামাঝি থেকে কিয়েভের কর্মকর্তারা তাদের পশ্চিমা মিত্রদের কাছে দেনদরবার করছেন। প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র যে সম্পদ ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তরের ঘোষণা দিয়েছে তা পরিমাণে সামান্য হলেও ভবিষ্যতে এমন আরও পদক্ষেপের নজির হিসেবে কাজ করার সম্ভাবনা রাখে।