যেভাবে গোপনে ইউক্রেনে গেলেন জো বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হঠাৎ করেই গতকাল সোমবার কিয়েভ গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। সেখানে উপস্থিত হওয়ার পর তার এ সফরের কথা টের পায় বিশ্ববাসী। কারণ পুরো সফরটাই ছিল গোপনীয়তায় ঢাকা। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাধারণ যে প্রটোকল, সেটা ভেঙেই কিয়েভে সফর করেছিলেন তিনি।

গোপনেই কিয়েভ পৌঁছেন জো বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কর্মসূচি অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার তার পোল্যান্ড সফরের কথা। সম্ভবত সেটি ঠিক থাকবে। তবে এর আগের দিন যে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে কিয়েভ সফর করবেন, তার উল্লেখ ছিল না কোথাও। পুরো সফরটি হয়েছে সর্বোচ্চ গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে। কিয়েভে পৌঁছানোর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত এই সফরের ব্যাপারে সরকারিভাবে কোনো ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

রোববার ভোর চারটায় শুরু হয় তার এ সফর। ওয়াশিংটনের বাইরে একটি সামরিক বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গারে থাকা একটি এয়ার ফোর্স বোয়িং ৭৫৭-এ চড়ে বসেন জো বাইডেন। তার সাথে ছিল কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মী, একটি ছোট মেডিকেল টিম, ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা এবং গোপনীয়তার শপথ নেওয়া দুই সাংবাদিক। সাধারণত বাইডেন যেখান থেকে বিমানে চড়ে থাকেন, এটি ছিল তার চেয়ে বেশ খানিকটা দূরে। বিমানের প্রতিটি জানালায় পর্দা টানানো ছিল।

বাইডেন ও জেলেনস্কি

বাইডেনের সঙ্গে থাকা দুই সাংবাদিকের অন্যতম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিপোর্টার সাবরিনা সিদ্দিকী জানান, তাকে এবং ফটোগ্রাফারকে ওয়াশিংটনের বাইরে জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজে তলব করা হয়েছিল রাত সোয়া দুইটায়। সেখানে তাদের ফোন নিয়ে নেওয়া হয় এবং প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে বাইডেন কিয়েভ পৌঁছার পর তা ফেরত দেওয়া হয়।

বিমানটি প্রায় সাত ঘণ্টা উড়ে জার্মানির রামস্টেইনে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে জ্বালানি নেওয়ার জন্য নেমেছিল। তবে সেখানেও কেউ বিমান থেকে নামেনি। পরে বিমানটি প্যোল্যান্ডের উদ্দেশ্যে উড়ে যায় এবং সেখানকার রজেসজো-জাসিওনকা বিমানবন্দরে অবতরণ করে। রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে এ বিমানবন্দরটি ইউক্রেনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র পাঠানোর আন্তর্জাতিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

পরে বাইডেন ও তার দল বিমানবন্দর থেকে ইউক্রেনীয় সীমান্তের কাছে পোলিশ ট্রেন স্টেশন প্রজেমিসল গ্লোনির দিকে যান। এ সময় তার প্রটোকল থাকলেও তাতে কোনো সাইরেন ছিল না। পরে ওই রেল স্টেশনে গিয়ে একটি ট্রেনে ওঠেন বাইডেন ও তার টিম। পরদিন সকালে সূর্যোদয়ের সময় তারা কিয়েভ গিয়ে পৌঁছান।

এর আগেও বাইডেন কিয়েভ গিয়েছিলেন। তবে সেটি ছিল বারাক ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে। সে কথা মনে রেখে তিনি মন্তব্য করেন, কিয়েভে ফিরে আসাটা ভালো। অন্যদিকে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ইউক্রেনীয়দের জন্য এরকম সমর্থন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সোমবার কিয়েভ সফর শেষে সিডিউল অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার সকালে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদার সাথে সাক্ষাতের কথা রয়েছে বাইডেনের। বিকেলে ওয়ারশ ক্যাসেল থেকে বক্তৃতা করার কথাও রয়েছে তার।