ইমরান খানের বক্তৃতা সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের ‘লাইভ এবং রেকর্ড করা’ বক্তৃতা, মন্তব্য ও সংবাদ সম্মেলন সম্প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। দেশটির মিডিয়া নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (পিইএমআরএ) গতকাল রোববার অবিলম্বে সমস্ত স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছে। খবর হিন্দুস্তানটাইমস।

ইমরান খান

ইমরান খান রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ এবং ঘৃণামূলক বক্তব্য দেওয়ায় এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে দাবি করেন।

তারা বিবৃতিতে জানায়, লক্ষ্য করা যাচ্ছে, পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান বক্তৃতা/বিবৃতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ক্রমাগত ভিত্তিহীন অভিযোগ করে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে বিদ্বেষমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছেন, যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ক্ষতিকর এবং জনসাধারণের শান্তি ও স্থিতিবস্থাকে বিঘ্নিত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পিইএমআরএ আরও জানায়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইমরান খান যে সব ভিত্তিহীন অভিযোগ, ঘৃণ্য, অপবাদমূলক ও অযৌক্তিক বিবৃতি দিচ্ছেন সেগুলো সম্প্রচার করা পাকিস্তানের সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। স্যাটেলাইট সংস্থাগুলো কোনো ধরনের বাছ-বিচার ছাড়াই ইমরান খানের বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচার করছে, যা পিইএমআরএ আইনের লঙ্ঘন এবং আদালতের রায়ের বিরোধিতা। এ অবস্থায় পিইএমআরএ অবিলম্বে সমস্ত স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলে ইমরান খানের লাইভ বক্তৃতা সম্প্রচার নিষিদ্ধ করছে। এ নির্দেশনা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে পিইএমআরএ আইন অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

পিইএমআরএ

গতকাল রোববার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়, গত ২৩ নভেম্বর এক র‌্যালিতে ইমরান খানকে যে গুলি করা হয়েছিল, তার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ ও একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করেছেন। ওই একই বক্তৃতায় তিনি তার অনুগতের উদ্দেশ্যে বলেন, তিনি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সামনে কখনও মাথা নত করেননি এবং ভবিষ্যতেও করবেন না।

গতকাল যখন তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে আসে, তখন তিনি লাহোরে তার জামান পার্কের বাসভবনে তার দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে এ সব কথা বলেন।

গত সপ্তাহে একটি মামলায় আদালত ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বিদেশের নেতাদের কাছ থেকে ইমরান যেসব উপহার পেয়েছিলেন সেগুলোর কথা তিনি সঠিকভাবে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাননি বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। ইমরান খান এ মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করে। গতকাল তাকে গ্রেপ্তার করতে আসে। কিন্তু তাদের সে চেষ্টা নস্যাৎ করে দেয় ইমরান খানের ভক্ত সমর্থকরা। শেষ পর্যন্ত ইমরান খানকে গ্রেপ্তার না করেই চলে যেতে বাধ্য হয় পুলিশ।