কাশেম সোলেইমানি হত্যায় সাবেক ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত

ইরানি জেনারেল কাশেম সোলেইমানি হত্যার ঘটনায় ইরাকের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাজিমির সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইরাকের পাবলিক প্রসিকিউশন এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে। ইরাকি প্রেসিডেন্ট আবদুল লতিফ রশিদের ইরান সফরের দুইদিনের মাথায় এ ঘোষণা এলো।

মুস্তাফা আল-কাজিমি ইরাকের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান থাকাকালে বাগদাদ বিমানবন্দরে ড্রোন হামলায় জেনারেল কাশেম সোলেইমানি নিহত হন

আল-আহাদ নিউজ পোর্টালের খবরে বলা হয়েছে, প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা কাশেম সোলেইমানি ও আবু আল-মুহান্দিস হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাজিমির সংশ্লিষ্টতা তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

গত মাসে ইরাকের পার্লামেন্ট সদস্য হুসেইন মোয়ানিস কাশেম সোলেইমানি ও আবু আল-মুহান্দিস হত্যায় মুস্তাফা আল-কাজিমির জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন। ইরাকের প্রসিকিউশন সার্ভিসের কাছে দেওয়া এক লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষপদে থাকাকালে মুস্তাফা আল-কাজিমি প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতাদের টার্গেট করার পাশাপাশি বাগদাদ বিমানবন্দরের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেন।

ইরাকের পাবলিক প্রসিকিউশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে মুস্তাফা আল-কাজিমির বিরুদ্ধে আল-নাসর নেতাদের টার্গেট করার ও বাগদাদ বিমানবন্দরের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলেইমানি ইরাক, সিরিয়া, লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ইসরায়েল-বিরোধী প্রতিরোধ সংগঠনের নেতৃত্বে ছিলেন। ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি সিরিয়া থেকে একটি যাত্রীবাহী বিমানে বাগদাদ পৌঁছার কয়েক মিনিটের মাথায় ড্রোন হামলায় তিনি নিহত হন।

বাগদাদ বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর সময় কাশেম সোলেইমানিকে বহনকারী গাড়িতে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছিল। হামলায় কাশেম সোলেইমানির সঙ্গে একই গাড়িতে থাকা ইরাকের পপুলার মোবিলাইজেশন মুভমেন্টের নেতা আবু আল-মুহান্দিসও নিহত হন। সে সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোলেইমানিকে হত্যার খবর প্রকাশ করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র ওই হামলা চালায় বলে ট্রাম্প দাবি করেন।

এদিকে কাশেম সোলেইমানি হত্যায় ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে জানিয়েছেন দেশটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের প্রধান তজাচি খানেগবি। গতকাল ইসরায়েলের চ্যানেল টুয়েলভ টেলিভিশনে এক টকশোতে তিনি এ কথা জানান।

খানেগবি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি একটি এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনে কাশেম সোলেইমানি নিহত হলেও হত্যার পরিকল্পনা করেছিল মোসাদ। ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফারিজাদেহকেও মোসাদ হত্যা করেছিল। তেহরানে একটি মনুষ্যবিহীন প্ল্যাটফর্ম থেকে গুলি চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।

প্রেসিডেন্ট আবদুল রশিদ লতিফের ইরান সফরের দুইদিনের মাথায় ইরাক সরকার কাশেম সোলেইমানি হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতার তদন্তের ঘোষণা দিল। গত অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট পদে অভিষিক্ত হবার পর শনিবার প্রথমবারের মতো প্রতিবেশী দেশ ইরান সফরে যান লতিফ। বিরাট প্রতিনিধিদল নিয়ে এ সফরকালে তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনী, প্রেসিডেন্ট এব্রাহীম রইসিসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।